/ সাক্ষাৎকার / শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয়, পাড়া মহল্লা থেকে খেলার মাঠের সমস্যার ক্ষোভও পড়ে বাস-ট্রাক ভাংচুরের মধ্য দিয়ে (পার্ট ২)
শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয়, পাড়া মহল্লা থেকে খেলার মাঠের সমস্যার ক্ষোভও পড়ে বাস-ট্রাক ভাংচুরের মধ্য দিয়ে (পার্ট ২)
আবু তাহের মোঃ শামসুজ্জামান:
|
প্রশ্নঃ আপনার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক মতাদর্শ বিষয়ে আপনি কি বলবেন? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ মৃত আবুল কাশেম ও রিজিয়া বেগমের ছোট সন্তান আমি কেএম রফিকুল ইসলাম। ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্র ছিলাম। পড়াশুনার পাঠচুকিয়ে বর্তমানে নিজেকে পরিবহন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। ছাত্রজীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রনিত হয়ে পংকজ দেবনাথের হাত ধরে রাজনীতির পথ চলা। রাজনীতির ক খ শেখা থেকে শুরু করে বর্তমানে দলের একজন কর্মীতে রুপান্তর রাজনৈতিক গুরু, অভিভাবক পংকজ দেব নাথের হাত ধরে। পংকজ দেবনাথে’র পরামর্শ ও দিক নির্দেশানতে আজ রাজনীতি ও ব্যবসায়ীকভাবে এই পর্যায়ে পৌছাতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও তার নির্দেশাতেই পথ চলবো। প্রশ্ন ঃ সাধারন মানুষের ধারনা পরিবহন জগতের সবাই অশিক্ষিত, আপনি কি করে ব্যাতিক্রম হলেন এবং সাধারনের এ ধারনা সম্পর্কে আপনি কি বলবেন? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ পরিবহন ব্যবসা বলতে এখনও অনেকেই মনে করেন বেশিরভাগ অশিক্ষিত, বা কম শিক্ষিত ও নেশাগ্রস্থ অথবা বখাটে প্রকৃতির লোকজনই এ ব্যবসা পরিচালনা করেন। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে তা কিন্তু মোটেই নয়। আজ অনেক উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী এবং উন্নত মনোভাবাপন্ন মানসিকতার লোকজন এ পেশায় নিজেকে সংজোযন করেছেন। যে কারনে দিন দিন উন্নত হচ্ছে পরিবহন বিভাগ। শুধু ব্যবসা নয় জনসেবার মানসিকতায় আজ অনেকে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন এ পেশা দিয়ে। যাত্রীসেবার মান পরিবহনের মান এবং নতুনত্ব উন্নত করছে এ ব্যবসার সকল বিভাগকে। নিজের কথা বলতে হলে বলতে হয় আমার এ ব্যবসায় সংযুক্ত হওয়ার পেছনের মূলে রয়েছে আমার রাজনৈতিক গুরু, বড় ভাই এবং দিক নির্দেশক পংকজ দেবনাথ। তার একান্ত পরামর্শ ও সহযোগীতায় পরিবহন ব্যবসায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি। একই সাথে দিন দিন ব্যবসাটিকে গুছিয়ে নিয়ে আজ এ পর্যায়ে আসতে পেরেছি। প্রশ্নঃ বর্তমানে মালিকদের অভিযোগ তারা ঠিকমতো ব্যাংক কিস্তি পরিশোধ করতে পারেনা। এটি কতটুকু সত্যি? সত্যি হলে এ সমস্যার কারন কি? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ বর্তমানে বেশিরভাগ বাস মালিকদের যে অভিযোগের কথা প্রসঙ্গে বলতে হয়, কিস্তি পরিশোধে সমস্যার মূলে রয়েছে ব্যাংকের অতিরিক্ত সুদের হার। পাশাপাশি বাসের খুচরা যন্ত্রাংশের অতিরিক্ত দাম। ব্যাংক সুদের হার যদি আরও কিছুটা কামনো যেতো এবং খুচরা যন্ত্রাংশের মূল্য কম হলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে একজন বাস মালিক তার সকল খরচের পর কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারতো। প্রশ্নঃ সিটিং সার্ভিস নিয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার অবস্থান কি? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ এ সমস্যা শুধুমাত্র বাস পরিচালনাকারী কোম্পানীর নয়। সমস্যাটি বহুমাত্রিক। সিটিং সার্ভিসকে অনেকে চিটিং সার্ভিস বলেন। কথাটি শুনলে আমার নিজের খুবই খারাপ লাগে। কিন্তু এ সমস্যাটিকে যদি বিশ্লেষন করি তাহলে বলতে হয়, আমাদের অনেক যাত্রী তার নিজের সুবিধা মতো জায়গায় নামতে পছন্দ করেন। নির্দিষ্ট ষ্টপেজে অনেকে নামতেও চায়না। যদি তাদের সুবিধামতো জায়গার না বাস থামানো হয় অনেক ক্ষেত্রে বাস চালক ও কন্ট্রাক্টরকে গালিগালাজ করতে দ্বিধা করেনা। এসকল যাত্রীদের জন্য আজ আমাদের যাত্রীসেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে। আমরা সবাই সচেতন হলেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব বলে আমি মনে করি। যত্রতত্র যাত্রীদের উঠানামা বন্ধ করতে পারলেই পরিবহনে যাত্রীসেবা আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রশ্নঃ বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কেমন দেখছেন? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানে সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ অগ্রগতির রোডম্যাপে। পাশাপাশি আমাদের পরিবহন নেতা খন্দকার এনায়েতুর রহমানের দিক নির্দেশায় পরিবহন জগত আজ উন্নত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও ট্রফিক বিভাগের আন্তরিকতায় ধীরে ধীরে পরিবহন ব্যবস্থাপনা উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা আমরা সকলের সহযোগীতায় যাত্রীদের দিতে পারবো বলে মনে করি। প্রশ্নঃ আপনি প্রজাপতি, রাঙা প্রভাত পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়াও বিহঙ্গ পরিবহনের একজন পরিচালক হিসাবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। আপনার পরিচালনাধীন বিহঙ্গ পরিবহনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। এই সকল অভিযোগের বাস্তবতা কতটুকু? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িত রাখতে পারি। কিন্তু কোন বাস ট্রাক বা পরিবহন ব্যবস্থাপনাতো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। কিন্তু দেখবেন যেকোন রাজনৈতিক কর্মসূচীর অসফল পরিসমাপ্তি ঘটে পরিবহনের উপর দিয়ে। হরতাল, ধর্মঘট, মিছিল মিটিং-এর সমস্যা সবখানেই অত্যাচার চলে বাস-ট্রাক বা পরিবহনের ভাংচুরের মধ্য দিয়ে। বিগত বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও তার একটি জ্বলন্ত উদাহারন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয় পাড়া মহল্লা থেকে খেলার মাঠের সমস্যার ক্ষোভও পড়ে বাস-ট্রাক ভাংচুরের মধ্যদিয়ে। অনেকে মনে করে আমি ব্যক্তিগতভাবে বর্তমান রাজনৈতিক দলের আদর্শকে ধারন-লালন করি সেকারনে আমার প্রজাপতি অথবা বিহঙ্গ পরিবহনের নামে নানান অভিযোগ করে থাকেন। আমি তাদের এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলবো, যারা পরিবহনের বিরুদ্ধে কটুকথা বলেন তাদের পরিবারিক ও ব্যক্তি ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে তাদের ৭১এ কালো ভুমিকা। দেশের বিরুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যারা বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল তারাই মূলতঃ এসব অবান্তর অভিযোগ করে থাকে। এক্ষেত্রে বিহঙ্গ পরিবহন পরিবার কখনই কোন প্রশ্ন তোলার মতো কাজ করেনি। কোন পরিবহন কোম্পানীই রাজনৈতিকভাবে কটু প্রশ্ন তোলার মতো কোন কাজ কখনই করতে পারেনা, করেও না। প্রশ্নঃ পরিবহন ব্যবসা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? কে এম রফিকুল ইসলাম ঃ আমার কিছু ভবিষ্যত পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আমার অভিবাবক পংকজ দেবনাথের পরামর্শ ও দিক নির্দেশনায় আমি তার বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আমি একজন ছোট কর্মী হিসাবে পংকজ দেবনাথের হাত ধরে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অংশ গ্রহন করছি এবং সে পথেই চলবো। পরিবহন ব্যবসাটাকে পরিচ্ছন্নভাবে পরিচালনার জন্য পাশাপাশি রাস্তায় দূঘটনা রোধে চালক, হেলপার ও বাস মালিকদের মনোত্বাত্বিক উন্নয়নে কাজ করছি। আমার পরিবহনের বাসগুলিকে ডিজিটাল নজরদারিতে এনেছি। পাশাপাশি নতুন সার্ভিস রাঙা প্রভাতে ওয়াইফাই সার্ভিস চালু করেছি। এতে করে সকল যাত্রীগন নেটসার্ভিস পাচ্ছে, তাদের ডিজিটাল জগতে প্রবেশের পরিধি বাড়ছে। ড্রাইভারদের আরোও সুশিক্ষিত করার জন্য প্রজাপতি, বিহঙ্গ ও রাঙা প্রভাত পরিবহন পরিবারের পক্ষ হতে একটি আদর্শ শিক্ষা কেন্দ্র করার ইচ্ছা আমার আছে। আমি আশাকরি এ প্রচেষ্টাও অতিশীঘ্র বাস্তবায়ন করতে পারবো। আপনাকে নতুন বার্তার পক্ষ হতে আন্তরিক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য। আপনাকেও ধন্যবাদ |