![]() দুটি অবুঝ শিশু কে আসামী করায় জেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি
কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও:
|
![]() মামলার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ মামলার বাদী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোলানী গ্রামের মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম ও একই গ্রামের মৃত মহিরউদ্দিনের ছেলে আসামী সাজেদুর রহমান এর মধ্যে জমি জমা সংক্রান্ত মামলা চলছে যা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলার চলাকালীন সময়ে গত ১৬ নভেম্বর ধান কাটা মারামারি,ভয়ভীতি ও ধান চুরির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ আনেন তিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯ নভেম্বর ১৩ জনকে আসামী করে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ঠাকুরগাঁওয়ে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোল্লা সাইফুল ইসলাম মামলাটি গ্রহণ করে সমন একজনে বয়স ৫ অন্য জনের বয়স ৮। পৌষের কনকনে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে দুই শিশু বৃহস্পতিবার দাঁড়িয়েছিল ঠাকুরগাঁও জেলা আদালত প্রাঙ্গণে। তারা কোন দর্শনার্থী নন। তারা একটি সন্ত্রাসী মামলার আসামী। হাজিরা দিতেই হাজির হয়েছিল আদালত প্রাঙ্গণে। দুটি অবুঝ শিশু ও এক কিশোরকে আসামী করে মামলা দায়ের করায় জেলায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলায় মোট আসামী ১৩ জন। মামলা নং ৩৭৫/১৭ টি। এতে ১৩ জন আসামীর মধ্যে দুইজন প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া মোলানী গ্রামের রশিদুলের শিশুপুত্র আশরাফুল (৫) ও একই গ্রামের ওবাইদুরের শিশুপুত্র উজ্জল (৮) এবং ইসমাইল নামে একজন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র রয়েছে। আশরাফুল মোলানী ঝাড়গাঁও মিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর ছাত্র এবং উজ্জল ৯২ নং ছেপরি কুরা সরকারী বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র ও কিশোর ইসমাইল মোলানী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র। তবে মামলার আর্জিতে ৫ বছরের শিশু আশরাফুলের ও ৮বছরের শিশু উজ্জলের বয়স দেখানো হয়েছে ২৩ বছর করে এবং কিশোর ইসমাইলের বয়স দেখানো হয়েছে ২১ বছর। আদালত আসামী সকলের বিরুদ্ধে সমনজারি করলে বৃহস্পতিবার শিশু কিশোরসহ আসামীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে অন্য আসামীদের জামিন দিলেও তিন শিশু-কিশোরকে শিশু ও কিশোর আদালতে প্রেরণ করেন। সেই সঙ্গে আদালত বাদীকে তিরস্কার করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবি এড.জাকির হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু বিবেচেনা করা হয়। আর সর্বনিম্ন ৯ বছর বয়সিদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে শিশু আইন, আলাদা অভিযোগপত্র, এজাহার এবং আদালত– এসব বিধান মানতে হবে।’ অবুঝ শিশুদের আসামী করাই আদালত বাদীকে তিরস্কার করেছে। তিনি আরো বলেন, মামলা গ্রহনের সময় আদালত সমন না দিয়ে তদন্ত দিলে হয়তো এ ঘটনা ঘটতো না। |