![]() দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় নোয়াখালী-৬ আসনের সংসদ সদস্যের স্বামী মোহাম্মদ আলীর
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি সম্পত্তি ভোগদখল আর দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই করা হয়। ৩ এপ্রিল মোহাম্মদ আলীর দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ২৮ এপ্রিল তলবি নোটিশ পাঠানো হয় তাকে। আর ৫ মে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুদকের নথিপত্র অনুযায়ী শুধু ধানমন্ডি ও পল্লবীতেই মোহাম্মদ আলীর আছে ১০টি ফ্ল্যাট। আর যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় আছে হোটেল ও অন্য ব্যবসা। মোহাম্মদ আলী, নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। দল বদল আর দলের
বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে টিকে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা।ভূমিহীন সেজে সরকারি
খাস জমি নিজের এবং পরিবারের নামে বন্দোবস্ত নেওয়া মোহাম্মদ আলী ঠিক কত
টাকার মালিক, তার অনুসন্ধান এখনও শেষ করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশন
(দুদক)। দুদকের অনুসন্ধানে মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী, হাতিয়ার বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদাউস, তিন সন্তান ও দুই শ্যালকের বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। গত ৫ মে সরকারি টাকা আত্মসাৎ, বনভূমি দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মোহাম্মদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
এদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদে নেতৃত্ব দেন
দুদক উপপরিচালক সেলিনা আক্তার মনি। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন— সহকারী
পরিচালক সিফাত উদ্দিন ও উপসহকারী পরিচালক শিহাব সালাম। এর আগে ২৮ এপ্রিল
তাকে তলবি নোটিশ পাঠানো হয়। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, মোহাম্মদ আলীর বর্তমান ঠিকানা ধানমন্ডির ১৪ নম্বর রোডের ৮/সি নম্বর বাসা। আর স্থায়ী ঠিকানা হাতিয়ার আফিয়া বাজার, চুরেসসুর তালুকদার গ্রাম। ১৯৬১ সালের ৭ এপ্রিল তার জন্ম। স্নাতক পাস তিনি। দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘অনুসন্ধান এখনও শেষ হয়নি। অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না মোহাম্মদ আলীর কী আছে আর কী নেই।’ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি আর বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’ দুদকে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদের তথ্যই দুদকে জমা দিয়েছি।’ দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে অর্থ নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাড়ি বা সম্পদ করার সুযোগ নেই। এ দেশের যারা সেখানে সম্পদ করেছেন, তারা মূলত টাকা পাচার করেছেন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনে সই করেছে।’ এর আওতায় তথ্য চাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। দুদকের অনুসন্ধানে মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের আরও যেসব সম্পদের তথ্য মিলেছে− ১. রাজধানীর ধানমন্ডিতে চার কাঠা জমিতে পাঁচতলা বাড়ি ২. হাতিয়ায় পাঁচতলা ইশিতা আবাসিক হোটেল ৩. হাতিয়ায় ৪০ বিঘা জমি ৪. গাজীপুরে চার বিঘা জমি ৫. পূর্বাচলে তিন বিঘা জমি ৬. ইসলামী ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার এফডিআর ৭. শেয়ারবাজারে শত কোটি টাকার বিনিয়োগ ৮. চৌমুহনী বাজারের দুই পাশের খাল দখল করে দু’টি মার্কেট ৯. আসকা বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে আরও একটি মার্কেট। দুদকের তথ্য বলছে, হাতিয়ায় পৌরসভা থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন মোহাম্মদ আলী। হাতিয়া পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদের টেন্ডার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পারিবারিকভাবেই নিয়ন্ত্রণ করেন মোহাম্মদ আলী। |