/ সারাদেশ / তিন দিনের ছুটিতে সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়
তিন দিনের ছুটিতে সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়
নতুন বার্তা, রাঙামাটি:
|
টানা তিন দিনের সরকারি ছুটিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে। ছুটির অবকাশে সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন হাজার হাজার পর্যটক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮শ ফুট উচ্চতার মেঘেছোঁয়া সাজেক পাহাড় মুখর হয়ে উঠেছে অগণিত পর্যটকের পদচারণায়। কংলাক পাহাড়, ঐতিহ্যবাহী লুসাই ভিলেজ আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকানো শুভ্র-সাদা মেঘের মিতালি প্রতিনিয়তই কাছে টানছে পর্যটকদের।
সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে স্থাপিত শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। এছাড়া রুম না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন সাজেকে বেড়াতে যাওয়া বহু পর্যটক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে দলের অন্যতম নেতা মিলন চাকমা ওরফে সৌরভের মৃত্যুর প্রতিবাদে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা এবং রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও সাজেক এলাকায় অঘোষিতভাবে সড়ক অবরোধ পালন করছে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে মিলন চাকমাকে অস্ত্রসহ আটকের পর হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। কিন্তু ইউপিডিএফের দাবি, অমানুষিক ও শারীরিক নির্যাতনে তাদের দলীয় সদস্য মিলনের মৃত্যু ঘটেছে। ঘটনার প্রতিবাদে ইউপিডিএফের ডাকা সড়ক অবরোধ উপেক্ষা করে শত শত গাড়ি নিয়ে সাজেকে হাজার পর্যটকের পাড়ি জমছে বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর সিক্স বেঙ্গল বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনতাসীর রহমান পিএসসি বলেন, সাজেকে নিরাপত্তাবাহিনীর কড়া নজরদারি রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা নিয়মিত টহলের পাশাপাশি আসা-যাওয়ায় দুইবার স্কট দিয়ে থাকি। কঠোর নিরাপত্তার ফলে সাজেক পর্যটকদের কাছে পছন্দের শীর্ষে। সাজেক বাঘাইহাটবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মেঘালয় রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মো. জুয়েল বলেন, টানা তিন দিনের সরকারি ছুটি পড়ায় বৃহস্পতিবার থেকে পুরো তিন দিন সাজেকের শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ সম্পূর্ণ বুকিং হয়ে গেছে। এখন আর নতুন করে কাউকে রুম দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস এবং শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তাই সাজেকে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় জমেছে। সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুমঘর কটেজের মালিক জেরী লুসাই বলেন, বর্তমানে সাজেকের রিসোর্ট ও কটেজগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে ৫ গুণ অধিক পর্যটক অবস্থান করছেন। আমরা তাদের রুম দিতে পারছি না। তাই অনেক পর্যটক ফিরে গেছেন। সাজেকের হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) লালথাংগা পাংখোয়ার মতে, সাজেকভ্যালি এখন বাংলাদেশের বৃহত্তর পর্যটন স্পট। সেখানে প্রায় সময় দৈনিক কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সাজেকে কোনো ব্যাংকের শাখা নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা নগদ টাকা নিয়ে সব সময় আতঙ্কে থাকেন। আবার অনেকে ভিন্ন উপায়ে ভারতের মিজোরামে বাংলাদেশি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে সাজেকে যে কোনো ব্যাংকের শাখা খোলার দাবি জানান। সাজেকের খাবার হোটেল মালিক মো. জহির রায়হান বলেন, আমরা বাড়তি পর্যটকদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। এরমধ্যেও সাধ্যমতো চেষ্টা করছি পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে। ঢাকা থেকে সাজেক বেড়াতে যাওয়া পর্যটক তানিয়া মিথুন বলেন, আমরা তিন মাস আগে রুম বুকিং দিয়েছি। খুবই আনন্দে সাজেক ভ্রমণ উপভোগ করছি। পর্যটক ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, দেশের অন্যসব পর্যটন স্পটের চেয়ে সাজেকে গাড়িভাড়া, রিসোর্ট বুকিং, খাবার খরচ অনেক বেশি। |