/ সারাদেশ / নরসিংদীতে বিষ খেয়ে থানায় আসা শিক্ষার্থীর সাথে কী হয়েছিলো
নরসিংদীতে বিষ খেয়ে থানায় আসা শিক্ষার্থীর সাথে কী হয়েছিলো
নতুন বার্তা, নরসিংদী:
|
ঢাকার কাছে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে।
একই সঙ্গে তাকে আটক করতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে পুলিশ এবং ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত কমিটি করে সোমবারের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। থানার বক্তব্য শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মিয়া বলেছেন প্রভা আক্তার নামের ওই ছাত্রী বাজার থেকে ইঁদুর মারার বিষ সংগ্রহ করে সেটি পান করে সরাসরি থানায় এসে তার এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। "থানায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাকে সে বলেছে যে 'ম্যাডাম আমাকে আগেও মেরেছে। আজকেও (বৃহস্পতিবার) মেরেছে। আমার কিছু হলে ম্যাডামই দায়ী," বলছিলেন তিনি। সালাউদ্দিন মিয়া বলছেন বিষ খাওয়ার কথা বলতে বলতেই ঢলে পড়ছিল মেয়েটি এবং সে কারণে দ্রুততার সাথে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে ওয়াশ করানোসহ দরকারি সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেয়েটিকে বাঁচানো যায়নি। পুলিশ ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ভাষ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার স্কুলের এসেম্বলিতে স্কুল ইউনিফর্ম যথাযথভাবে না পরে আসায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা তাকে ভৎর্সনা করেন। যদিও পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী বিষ খেয়ে থানায় গিয়ে ওই ছাত্রী পুলিশকে বলেছে যে তাকে প্রহার করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কী বলছেন "ছাত্রীটি থানায় গিয়ে প্রহারের কথা বলেছে। কিন্তু আমার স্কুলে কোন বেতই নেই। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে ফোনে পাচ্ছি না। তাই আসলে কী হয়েছিলো বলা কঠিন," বলছিলেন প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলছেন অন্যদের কাছ থেকে যে খবর তিনি পেয়েছেন তাতে শিক্ষিকা তাকে ভৎর্সনা করেছিলেন সবার সামনে, হয়তো এটিকে সে অপমান হিসেবে বিবেচনা করেছে। অবশ্য স্কুলের সহপাঠীদের উদ্ধৃত করে স্থানীয় একজন অভিভাবক জানিয়েছেন যে এসেম্বলিতে ভৎর্সনার পরে শ্রেণীকক্ষেও একই বিষয় নিয়ে ছাত্রীটিকে কটাক্ষ করেন ওই শিক্ষিকা এবং এ সময়ে তাকে দাঁড় করিয়ে কয়েকটি চড়ও দেন তিনি। এর পরপরই স্কুল ছুটি হয় এবং ওই শিক্ষার্থী সোজা দোকানে গিয়ে ইঁদুর মারার বিষ কিনে তা পান করে নিজেই সরাসরি থানায় গিয়ে উপস্থিত হন। প্রধান শিক্ষক বলেছেন ওই ছাত্রীর বাবা বিদেশে থাকেন এবং দেশে সে তার মায়ের সাথে থাকতো। এর আগেও কিছু বিষয়ে ওই ছাত্রীকে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে এসেছিলেন তার মা। "কিছু বিষয় নিয়ে তার মা তাকে নিয়ে এসেছিলো আমার কাছে। আমরা কাউন্সেলিং করেছি। বাচ্চা মানুষ। হয়তো জিদ বা আবেগ বেশি। কিন্তু কী কারণে মৃত্যুর মতো কঠিন সিদ্ধান্ত হলো সেটি হয়তো পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসবে। বা তার রাগের আড়ালে কোন অন্য কোন কারণ ছিলো কি না সেটি আমরা জানি না," বলছিলেন প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর। জানা গেছে থানায় শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ডেকে নেয় পুলিশ। একই সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও ওই ছাত্রী কথা বলেছিলেন। কিন্তু এর পরেই তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে শিবপুর থেকে নরসিংদীতে হাসপাতালে পাঠানো হয় কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর সময় তার মৃত্যু হয়। |