/ সারাদেশ / সাড়ে ৬ বছরের শিশু হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি!
সাড়ে ৬ বছরের শিশু হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি!
নতুন বার্তা, দৌলতখান (ভোলা):
|
হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সাড়ে ছয় বছরের শিশু মো. শাকিলকে। এ বয়সে বাবার কোলে চড়ে ভোলা জেলা জজ আদালতে বারবার একটি মামলার প্রধান আসামি হয়ে হাজিরা দিতে হচ্ছে তাকে। জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী বর্তমানে তার বয়স ছয় বছর সাত মাস। কিন্তু তাকে আসামি করার জন্য এজাহারে বয়স দেখানো হয়েছে ২০ বছর। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার পর জেলা জজ আদালতেও এ পর্যন্ত তিনবার হাজিরা দিতে হয়েছে শিশু শাকিলকে।
শাকিল উপজেলার দিদারুল্যাহ গ্রামের সাবেক সেনাসদস্য মো. মোখলেছুর রহমানের ছেলে। সে বাড়ির পাশের খাদিজাতুল কুবরা নুরানি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল মোখলেছুরের চাচা সম্পর্কীয় আবদুল মন্নান বাদী হয়ে তার শিশুছেলে মো. শাকিলকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে দৌলতখান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অন্য আসামিরা হলেন- শাকিলের বাবা মোখলেছু রহমান, চাচা মাহে আলম, দাদা আবদুল খালেক, মা রুনু আক্তার ও চাচি নাসিমা বেগম। শাকিলের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষের অভিযোগ, তার নেতৃত্বে বাদী ও সাক্ষীদের হত্যার উদ্দেশে হামলা করে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। নারীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। ১১ এপ্রিল করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দৌলতখান থানাকে নারী দুই আসামি ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে দৌলতখান থানায় ১৫ এপ্রিল মামলা দায়ের করা হয়। জামিনের জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন আসামিরা। ১৮ এপ্রিল উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে শিশু শাকিলসহ অপর আসামিদের চার সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন। শাকিলের বাবা সাবেক সেনাসদস্য মোখলেছুর রহমান বলেন, বাদী আবদুল মন্নানের সঙ্গে আমাদের জমিজমার বিরোধ রয়েছে। বাদীপক্ষ জমি আত্মসাতের চেষ্টা করে আসছেন। আর সে উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে ষড়যন্ত্রমূলক আমার শিশুসন্তানকে মামলার আসামি করে আমার পরিবারকে হয়রানি করছে। তারা আমার ৮৫ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে এবং ঢাকায় চাকরিরত ভাইকেও আসামি করেছে। সাড়ে ছয় বছরের শিশুর নেতৃত্বে হামলা ও মারামারি করা কিভাবে সম্ভব- এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী আবদুল মন্নান বলেন, শিশু শাকিলের বড় ভাইয়ের নামের পরিবর্তে ভুলবশত এজাহারে শাকিলের নাম লেখা হয়েছে। দৌলতখান থানার ওসি সত্যরঞ্জন খাসকেল এ বিষয়ে বলেন, মামলাটি প্রথমে থানায় হয়নি। মামলাটির ব্যাপারে আদালত থেকে নির্দেশনা এসেছে। সাড়ে ছয় বছরের শিশুর পক্ষে এত বড় অপরাধ ঘটানো সম্ভব নয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মনির প্রাথমিক তদন্তে ১নং আসামি যে একজন শিশু তার প্রমাণ পেয়েছেন। বাদী তার ভুল স্বীকার করেছেন। |