/ জাতীয় / সুপারশপে টাকা দিয়ে পাটের ব্যাগ কিনতে ‘আগ্রহ কম’ ক্রেতাদের
সুপারশপে টাকা দিয়ে পাটের ব্যাগ কিনতে ‘আগ্রহ কম’ ক্রেতাদের
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
দেশের সুপারশপগুলোতে ১ অক্টোবর থেকে কেনাকাটায় পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে সব সুপারশপে ক্রেতাদের জন্য রাখা হয়েছে পাট কিংবা কাপড়ের ব্যাগ। ক্রেতারাও পলিথিনের বিকল্প এসব ব্যাগে কেনাকাটা করছেন। তবে পলি ব্যাগ বিক্রেতার পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও পাটের বা কাপড়ের ব্যাগ নিজের টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এ নিয়ে ক্রেতাদের অনেকের মধ্যে অনীহাও দেখা গেছে। বলা চলে, সুপারশপে কেনাকাটা করতে গিয়ে পকেটের টাকায় ব্যাগ কিনতে আগ্রহ কম তাদের। সরেজমিনে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সুপারশপ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিন আগোরা, বিগ বাজার, স্বপ্ন, ডেইলি শপিং, ইউনিমার্টের মতো সুপারশপগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের হাতে হাতে পাটের বা কাপড়ের ব্যাগ। সুপারশপগুলোতে ছোট-বড় বা মাঝারি বিভিন্ন মাপের পাটের ব্যাগ রাখা রয়েছে। সেখান থেকে ব্যাগ কিনে তাতে প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে ফিরছেন ক্রেতারা। কেউবা আবার পলি ব্যাগ নিষিদ্ধের খবরে বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে আসেন। তবে অলিগলির সুপারশপগুলোতে এখনো পাটের ব্যাগের ব্যবহার পুরোপুরি শুরু হয়নি। সেসব শপে পলিথিন ব্যাগেই পণ্য কেনাবেচা চলতে দেখা গেছে। আমানা বিগ বাজার কাকরাইল শাখার ম্যানেজার শিবলু সাদিক বলেন, আমরা ক্রেতাদের জন্য গত এক সপ্তাহ আগে থেকে পলিথিন বা নন-ওভেন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তি শপে টানিয়ে দিয়েছি। কোম্পানি থেকে দেওয়া পাটের ছোট ব্যাগ ২০ টাকা আর বড়গুলোর দাম রাখা হচ্ছে ৩০ টাকা। তিনি বলেন, সকাল থেকে অনেক ক্রেতা অভিযোগও করেছেন। তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে পকেটের টাকায় ব্যাগ কিনতে আগ্রহী নন। তাদের বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। ক্রেতারা ব্যাগ ফ্রি চান। কিন্তু প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ক্রেতাকে ফ্রিতে ব্যাগ দেওয়া সম্ভব নয়। ব্যাগ ফ্রি দিলে সুপারশপগুলোকে লোকসান গুনতে হবে। আমরা (সুপারশপগুলো) আইন মানতে বাধ্য। এই আউটলেটে কেনাকাটা করতে আসা আলমগীর হোসেন নামে একজন ক্রেতা বলেন, এত টাকার বাজার করবো, আবার ব্যাগও কিনতে হবে? এটা তো ফ্রি পাওয়ার কথা। সেগুনবাগিচা আগোরা আউটলেটের সামনে কথা হয় সেখানকার বাসিন্দা মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরাও পলিথিন ব্যবহার করতে চাই না। কিন্তু বিকল্প ব্যাগ পর্যাপ্ত ও সুলভ মূল্যে পাওয়া গেলে সেটা আমাদের জন্য উপকার। নয়তো প্রতি মাসে ব্যাগের পেছনে অনেক টাকা যাবে। সেগুনবাগিচা আগোরা আউটলেটের সামনে কথা হয় সেখানকার বাসিন্দা মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরাও পলিথিন ব্যবহার করতে চাই না। কিন্তু বিকল্প ব্যাগ পর্যাপ্ত ও সুলভ মূল্যে পাওয়া গেলে সেটা আমাদের জন্য উপকার। নয়তো প্রতি মাসে ব্যাগের পেছনে অনেক টাকা যাবে। পুরানা পল্টনের নিউ আমানত সুপারশপে গিয়ে দেখা যায়, নন-ওভেন বা টিস্যু ব্যাগের ব্যবহার। একই অবস্থা দেখা গেছে রাজধানীর অলিগলির কিছুর সুপারশপেও। বাড্ডায় স্বপ্ন সুপারশপের একটি আউটলেটে পাট বা কাপড়ের ব্যাগের সরবরাহ না থাকায় পলি ব্যাগে ডিম বিক্রি করতে দেখা গেছে। স্বপ্ন মালিবাগ আউটলেটের ম্যানেজার হাফিজ বলেন, আমাদের আউটলেটগুলোতে ৬ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত ব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ টাকা দিয়ে ব্যাগ কিনতে চাচ্ছে না। সবাই বলেন, এত টাকার জিনিস নিলাম ব্যাগ ফ্রি দিতে হবে। আমরা আপাতত লক্ষ্য রাখছি, কোম্পানি পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে। এদিকে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি সুপারশপে পলিথিনের ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সেখানে তিনি বলেন, পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন যতদিন পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ না হয় ততদিন এ অভিযান চলবে৷ একটি বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রয়োগ শুরু করেছি৷ আমরা পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি৷ যৌথভাবে এই ক্যাম্পেইনটা করছি৷ যেন পলিথিনের শপিং ব্যাগ উঠে যায়৷ ধীরে ধীরে পাট এবং কাপড় বা পুরনো কাপড় যেগুলো আমরা ফেলে দিই সেগুলোর রি-ইউজ (পুনর্ব্যবহার) করে ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি৷ |