/ সারাদেশ / মৌলভীবাজারে রেলের ভূমি কৃষি লীজের নামে চলছে ভূমি দখলের মহোৎসব
মৌলভীবাজারে রেলের ভূমি কৃষি লীজের নামে চলছে ভূমি দখলের মহোৎসব
মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী:
|
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের সিলেট-আখাউড়া সেকশনের মৌলভীবাজার অঞ্চলে চলছে রেলওয়ের ভূমি দখলের প্রতিযোগিতা। রেল বিভাগের অদৃশ্য নিরবতায়। শ্রীমঙ্গলে স্টেশনে রেলের দু পার্শ্বে কৃষি ভূমিতে বাসা/বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের হিড়িক শুরু হয়েছে। শ্রীমঙ্গল শহরের সোনার বাংলা রোড এলাকায় রেলের ভূমিতে,মাছ চাষের জন্য পুকুর লিজের নামে ঘর নির্মাণ রানা নামে একজন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও রেলওয়ের সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে গড়ে উঠছে অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট, মার্কেট, অট্রালিকা ভবন, বাণিজ্যিক প্রতিষ্টানসহ নানা রকম স্থাপনা। ফলে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার কৃষিজমি ও ভূ-সম্পত্তি বেহাত হচ্ছে। জানা যায় বিগত ওয়ান-ইলেভেনে যৌথ বাহিনী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন রেল ষ্টেশন সংলগ্ন স্থান থেকে কিছূ জমি প্রভাবশালীদের দখল থেকে উদ্ধার করলেও ধীরে ধীরে আবার বেদখল হয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকার প্রায় ৬ একর জায়গায় অবৈধ ভাবে দখল করে টিনসেড, পাকা ও আধা পাকা ঘর বাড়ি বানিয়ে চড়া মূল্যে দখল বিক্রি করছে,আবার কেউ কেউ কৃষি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে দোকান কোটা করে ভাড়া দিচ্ছে। শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশন সংলগ্ন স্থানে দুইটি পুকুর ছিলো একটি পুকুর কৃষি লিজ নিয়ে ভরাট করে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছে আর আরেক টি পুকুর রানা নামে এক প্রভাবশালী কৃষি লিজ নিয়ে ভরাট করছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর জানান এতদিন পুকুর এভাবেই উন্মুক্ত ছিল,এখন কিছু মানুষ পুকুরের পাড় দখল করে আছে। এতটুকু পানিতে তারা চাষ করবে আর ঘরবাড়ি যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। শুধু পানি যতটুকু আছে ততটুকু চাষ করা যাবে, পুকুরের লিজ নিচ্ছে তারা। কৃষি কাজের লিজ নিয়ে তারা বড়বড় বিল্ডিং করে। গরিবরা তো অসহায় হয়ে রাস্তায় পরে থাকে,এখন উচ্ছেদ করলে রেল স্টেশন থেকে উঠে যেতে হবে। আমরা যার থেকে জায়গা কিনেছিলাম তিনি এখন বলছেন এই জায়গাটা তার না সরকারের জায়গা। মাছ চাষের জন্য পুকুর লিজের নামে ঘর নির্মাণ মোঃ রানা মিয়া বলেন আমি টিন দিয়ে ভাসমান ঘর বানিয়েছি। যাদের লিগ্যাল কাগজ আছে সে ঠিক আছে,আর যার কাগজ নাই সে কেন আসে সেটা অবশ্যই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দেখবে। আমি এখানে পুকুরে মধ্যে মৎস্য চাষ করার জন্য প্রক্রিয়া করেছি। আমি কিন্তু এখানে কোনো ঘর বানাই নি, মাছের খাদ্য রাখার জন্য টিন দিয়ে ভাসমান ঘর বানিয়েছি। শ্রীমঙ্গলে নাগরিক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মচ্ছিবির আল মাসুদ বলেন রেলওয়ে জায়গা লিস হয়,বাণিজ্যিক লিস আর কৃষি লিস হয়,সিজন লিস হয়। এতদিন পুকুর এভাবেই উন্মুক্ত ছিল,এখন কিছু মানুষ পুকুরের পাড় দখল করে আছে। দখল করে এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাট করে এক একটা ঘর তুলে পঞ্চাশ হাজার,বিশ হাজার করে বিক্রি করে ফায়দা হাসিল করছে। এতদিন এভাবেই ছিল। রেলওয়ের রাজস্ব আজ থেকে ষোলো বছর ধরে আছে, প্রায় ছয় কেয়ার রেলওয়ে জায়গা। প্রত্যেক জায়গায় রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভাবে সব জায়গায় কৃষি লিস দিয়ে রাখছে। ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কুলাউড়ার ফিল্ড কানুনগো মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমি এই সংবাদ শুনা মাত্রই তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছি শ্রীমঙ্গল থানায় এবং জিআরপি থানায়। পরবর্তীতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটা তারা বলতে পারবেন। পুকুরের বিষয়ে আমাদের বিভাগীয় স্টেশন অফিসার কার্যালয় থেকে আপনারা তথ্য পাবেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ আবু তালেব বলেন তারা কিভাবে ইজারা নিয়েছে তাদের কাগজ পত্র রেলওয়ে কি দিয়েছে সেই প্রেক্ষিতে আমি তদন্ত করবো । বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, কোন উদ্দেশ্যে লিজ দেওয়া হয়েছে- তারা কৃষি কাজের জন্য লিজ দিয়েছে নাকি ঘর তৈরি করার জন্য লিজ দিয়েছে। তারা কীভাবে ইজারা নিয়েছে, তাদের কাগজ পত্র কে দিয়েছে সেই প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করব এটার সত্যতা কতটুকু। কৃষিজমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক স্থাপনা করার কোনো সুযোগ নেই। |