/ সারাদেশ / সাতছড়ি উদ্যান দখল করে প্রভাবশালীদের লেবু চাষ
সাতছড়ি উদ্যান দখল করে প্রভাবশালীদের লেবু চাষ
নতুন বার্তা, হবিগঞ্জ:
|
হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের রিজার্ভ ফরেস্টের অভ্যন্তরে বিশাল জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা তৈরি করেছে লেবু বাগান। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বনের জীববৈচিত্র্য। এ ঘটনায় বনের খাদ্য সংকটে বন্যপ্রাণীদের লোকালয়ে চলে আসার ঘটনাও ঘটছে। সূত্র জানায়, লেবু চাষ করে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বনের জায়গা দখল হয়ে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ১৫ প্রভাবশালী ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ৪০০-৫০০ একর। এসব কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও কয়েকজন বন বিভাগের কর্মকর্তা ও সাতছড়ি উদ্যান কমিটির কতিপয় সুবিধাবাদী ব্যক্তি ম্যানেজ থাকায় ওসব বন ও বন্যপ্রাণী বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। সাতছড়ির রিজার্ভ ফরেস্ট দখল করে লেবু আবাদকারী স্থানীয় ১৫ জন হলেন- চিত্ত দেব বর্মা, বিজয় দেব বর্মা, সূর্য দেব বর্মা, আশীষ দেব বর্মা, হারিস দেব বর্মা, সুরেশ দেব বর্মা, রাসেল দেব বর্মা, অসিত দেব বর্মা, রঞ্জিত দেব বর্মা, প্রবীর দেব বর্মা, সমিরন দেব বর্মা, হিরন তন্তু, পরেশ দেব বর্মা, অমিত দেব বর্মা ও ফিরোজ দেব বর্মা। যারা সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের হর্তাকর্তা। এদের মধ্যে পরেশ দেব বর্মা ও অমিত দেব বর্মার বিরুদ্ধে রিজার্ভ ফরেস্টে ফাঁদ পেতে মায়া হরিণ ও বন্য শূকরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকারেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বন বিভাগের একাধিক অভিযানে বন্যপ্রাণী শিকারের ফাঁদ উদ্ধার করলেও এদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বন বিধ্বংসী লেবু চাষে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন স্থানীয় পাখি প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল। বিশ্বজিৎ পাল বলেন, যে ১৫ জন লেবু চাষ করছেন, তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে দেওয়া হোক সরকারি অনুদান। কিন্তু বন ধ্বংস করা চলবে না। এসব কারণে বন্যপ্রাণীদের খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ নিয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের ইনচার্জ মামুনুর রশিদ জানান, দীর্ঘদিন থেকেই এ লেবু চাষ করা হচ্ছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে অবগত রয়েছেন। অবশ্যই লেবু বাগান যেভাবে বৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। যোগাযোগ করা হলে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. জাহাঙ্গীর আলম জানান, একদিকে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর মানবিক দিক, অন্যদিকে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর ও ১৫০-২০০ প্রজাতির পাখি। |