/ রাজনীতি / মানুষের ধারণা অন্তর্বর্তী সরকার ইচ্ছা করেই নির্বাচন বিলম্বিত করছে
মানুষের ধারণা অন্তর্বর্তী সরকার ইচ্ছা করেই নির্বাচন বিলম্বিত করছে
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকার থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনি সংস্কারের জন্য কয়েকটা কমিশন করেছেন, সেসব কমিশন কাজ করছে, ভালো কথা। এই কমিশন কাদের সঙ্গে কাজ করছে? তারা কয়েকজন পণ্ডিত ব্যক্তিকে নিয়ে এসেছেন, আমরা তাদেরকে ভালো করে চিনি, সম্মান করি। কিন্তু একই সঙ্গে জনগণের কাছে যান, তারা কি চায় জানুন। আমরা বলেছি, আপনারা সংস্কার করেন আমাদের কোনো আপত্তি নাই। কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশের সমস্যা সবচেয়ে বেশি তৈরি হয়েছে যে, আজকে বাংলাদেশে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা এগুলো সমস্যা, এই সমস্যাগুলো অনেক কমে যাবে যদি একটা নির্বাচিত সরকার থাকে, নির্বাচিত সরকারের শক্তিটা অন্য এর পেছনে জনগণ থাকে, এই কথাটা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে। আমরা সংস্কার চাই, আমরা সংস্কার বেশি চাই। কিন্তু আমরা এটাও চাই, দীর্ঘকাল অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, ড. মুহাম্মদ ইউনূস (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, সেই প্রস্তাব হচ্ছে, ১৭ বছর ভোটার হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা। এখন তা হলে কি করতে হবে? নতুন করে আবার ভোটার তালিকা তৈরি করতে হবে। আমি মনে করি যে, এই বিষয়টাকে এভাবে না বলে, এটা উচিত ছিল যে, এই বিষয়ে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলে তারপরে এই বিষয়টা আনতে পারলে ভালো হতো, কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হতো না। এখন তো আপনার আরও বেশি করে মানুষ আশাহত হয়ে যাবে যে, এটা করতে গিয়ে আরও সময় যাবে, আরও সময় খাবে, আরও সময়ক্ষেপণ হবে, আরও বিলম্ব হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, কেন জানি না, মানুষের মধ্যে একটা ধারণা হচ্ছে- এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করছে, এটা সঠিক নয়। বাট এ্যাট দ্যা সেইম টাইম মানুষের মধ্যে এই আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। এই জিনিসটা (ভোটার তালিকার ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণ) তো কন্সনসাস না। ইউ আর দ্যা চিফ এক্সিকিউটিভ, আপনি প্রথমেই বলে দিচ্ছেন যে, ১৭ বছর হলে ভালো, আপনি যখন বলছেন, তখন দ্যাট বিকামস বাইন্ডিং অন দ্যা ইলেকশন কমিশন, যেটা ইলেকশন কমিশন ঠিক করবে। এই বিষয়টা ইলেকশন কমিশনকে ছেড়ে দিন। দ্যাট দ্যা ডিসাইড, ১৮ বছর তো আছে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। যদি এক বছর কমাতে চান তাহলে সেটা ইলেকশন কমিশন প্রস্তাব করুক, যারা নতুন হয়েছে। কিন্তু উনি (প্রধান উপদেষ্টা) যখন প্রথমেই বলে দেন তখন ইট ওয়াজ মাইন্ড ইট, এটা একটা চাপ তৈরি হয় ইলেকশন কমিশনের জন্য। তিনি বলেন, আমি আবারো বলছি, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে এবং আমরা যেটা চাই যে, তারা সফল হোক এবং এজন্য সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে আমরা তৈরি আছি। সবচেয়ে বেশি অনুরোধ করবো, দ্রুত করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে সমস্যাগুলোর সংকট বাড়তেই থাকবে এবং আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বলেন, বর্ডার সমস্যা বলেন, সাবোটাজ করার যে সমস্ত সব ঘটনাগুলো হচ্ছে, এই ঘটনাগুলো কমানো যাবে না। ফখরুল ইসলাম বলেন, আরেকটা সংবাদ দেখলাম, আরও দুই-তিনটা দল গঠিত হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়াতে আরও ২/৩টি দল গঠিত হয় আমাদের কোনো আপত্তি নাই। একশ’টা হলে, দুইশ’টা হলে তাতেও আপত্তি নাই। প্রশ্ন হচ্ছে, জাতির জন্য কতোটুকু কাজে লাগবে, সেটাই সবাই চিন্তা করবে। এখন বাংলাদেশে একটা সমস্যা কি জানেন, আমরা সবাই রাজনীতিবিদ। দেখবেন, রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে, চর্চা করতে আমরা পছন্দ করি। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মারাত্মকভাবে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সবাইকে রাজনীতিবিদ হওয়ার, সবাইকে সাংবাদিক হওয়ার, সবাইকে ইউটিউবার হওয়ার, সবাইকে ফিলোসোফার হওয়া, তাই না- সবাই হয়ে গেছেন, ভালো কথা, সবাই পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, সবাই কাজ করছেন। এটাকে একটা জায়গায় আনতে হবে তো। বাংলাদেশকে একটা পথে নিয়ে যেতে হবে তো। এখনো মানুষ স্বস্তি পায়নি বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। জাগপা’র সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এনডিপি’র চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। |