/ আন্তর্জাতিক / সিরিয়ায় গোপন অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছিল ইরান
সিরিয়ায় গোপন অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছিল ইরান
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
সিরিয়ায় গোপন ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্র গড়ে তুলেছিল ইরান। গোপন এই ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা থেকে লেবাননের হিজবুল্লাহসহ অঞ্চলজুড়ে ইরানের অন্যান্য মিত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র সাপ্লাই দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মূলত ইসরায়েলকে চাপে রাখতেই এই কৌশল গ্রহণ করেছিল তেহরান। আর এতে সহযোগিতা করে যাচ্ছিল সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ সরকার। মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র গোষ্ঠী ও প্রক্সি বাহিনীর একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিল ইরান। তাদের দাবি সেটি ওই অঞ্চলে মার্কিন ও ইসরায়েলি স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করতে গঠিত একটি ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ অংশ। বিভিন্নভাবে ইরানকে সমর্থন করে থাকে এই নেটওয়ার্ক। ইরান নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ অক্ষকে শক্তিশালী করতে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছিল সিরিয়া। বাশার আসাদ সরকার শুরু থেকেই হিজবুল্লাহসহ প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর বড় সমর্থক। আর এই গোষ্ঠীগুলোর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- ইসরায়েলসহ পশ্চিমা আধিপত্য শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা। ফলে নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে সিরিয়ায় অস্ত্রভান্ডার ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্রে গড়ে তুলতে তেহরানকে অনুমতি দিয়েছিল দামেস্ক। প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি দেশ সিরিয়া। একপাশে ভূমধ্যসাগর, অন্যপাশে ইরাক, উত্তরাংশজুড়ে তুরস্কের অবস্থাস, ইসরায়েল, লেবানন ও জর্ডানের সঙ্গে রয়েছে সীমানা। সবমিলে মধ্যপ্রাচ্যে ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা ও সাংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এই দেশটি। পৃথিবীর মধ্যভাগ বলে পরিচিত এই এই অঞ্চলে প্রভাব বজায় রাখতে যে কোনো শক্তির জন্য সিরিয়ার সমর্থন জরুরি। তাই পশ্চিমা এবং পশ্চিমাবিরোধী উভয়পক্ষের আগ্রহের বড় জায়গা দেশটি। বাশার আসাদ সরকার যেহেতু ইরানপন্থি জোটে যুক্ত হয়েছিলেন তাই যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলসহ পশ্চিমা শক্তির লক্ষ্য ছিল যে কোনো মূল্যে আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানো। ২০১২ সালে বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু হয়। দামেস্কের অভিযোগ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ মদদেই এই বিদ্রোহ শুরু হয়। তবে সে সময় রাশিয়া এবং ইরানের সহযোগিতায় ক্ষমতায় টিকে যান বাশার। বাশার সরকারের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহ ইরানের জন্য আরও বড় সুযোগ হয়ে এসেছিল। সিরিয়ায় বড় ধরনের সামরিক উপস্তিতি নিশ্চিত করতে পেরেছিল ইরান। সিরিয়ায় ইরানের সামরিক উপস্থিতি ও অস্ত্র ভান্ডারের খবর বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। এসব অস্ত্রভান্ডার বিভিন্ন সময়ে লক্ষবস্তুও হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের। গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে থাকা ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের দুটি অস্ত্র ও গোলাবারুদের গুদামে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর গত অক্টোবরে ইসরায়েল দাবি করে, তারা সিরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইরানের তৈরি একটি গোপন ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ধ্বংস করেছে। কারখানাটি লেবানন সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত বলেও জানিয়েছিল তারা। সম্প্রতি সেই অভিযানের কিছু গোপন নথি প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কান নিউজ। খবরে দাবি করা হয়েছে, হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগে বাধা দিতে এই অভিযান চালানো হয়। প্রতিবেদন মতে, ইসরায়েল সিরিয়ার মেসাফ শহরের কাছে অবস্থিত এই ভূগর্ভস্থ ক্ষেপণাস্ত্র কারখানায় অভিযান চালায়। এই ক্ষেপণাস্ত্র কারখানার দেখভালের দায়িত্বে ছিল ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী (আইআরজিসি)। |