/ ধর্ম ও জীবন / সবচেয়ে বড় গুনাহের ব্যাপারে হাদিসে যা এসেছে
সবচেয়ে বড় গুনাহের ব্যাপারে হাদিসে যা এসেছে
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৭) অপর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫)। আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৮২) এজন্য গুনাহ বা পাপ কাজ থেকে নিজেকে রক্ষার পাশাপাশি আল্লাহর হুকুম ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ এবং তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে বর্ণিত হাদিসে সবচেয়ে বড় গুনাহের কথাও এসেছে। মুমিনের উচিত এসব গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা। আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) একদিন তিনবার বললেন, আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহগুলো সম্পর্কে অবহিত করব না? ওই সময় উপস্থিত সকলে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! অবশ্যই বলুন। পরে রাসুল (সা.) বললেন, সেগুলো হলো আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা এবং পিতামাতার অবাধ্য হওয়া। কথাগুলো বলার সময় রাসুল (সা.) হেলান দিয়ে বসে ছিলেন, এরপর সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, শুনে রাখো- মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া, এ কথাটি তিনি বারবার বলতে থাকলেন। এমনকি আমরা বলতে লাগলাম, আর যদি তিনি না বলতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৭৮, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬১) অপর হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম কোন গুনাহ আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বড়? জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহর জন্য সমকক্ষ দাঁড় করানো। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। পরে আমি বললাম, এ-তো সত্যিই বড় গুনাহ। আমি বললাম, তারপর কোন গুনাহ? জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, তুমি তোমার সন্তানকে এই ভয়ে হত্যা করবে যে, সে তোমার সঙ্গে আহার করবে। আমি আবারও জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কেনটি? জবাবে তিনি (রাসুল সা.) বললেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে তোমার ব্যভিচার করা। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪১২৫) এছাড়াও আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন- রাসুল (সা.) বলেছেন, কবীরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ নিজের পিতা-মাতাকে লানত করা। ওই সময় জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আপন পিতা-মাতাকে কোনো মানুষ কীভাবে লানত করতে পারে? জবাবে রাসুল (সা.) বললেন, যখন সে অন্য কোনো মানুষের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে যখন অন্যের মাকে গালি দেয়, তারপর সে তার মাকে গালি দেয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৫৪৮) আরেকটি হাদিসে এসেছে, সাঈদ ইবন যায়দ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, না-হকভাবে (হক না থাকার পরও) কোনো মুসলিমের ইজ্জাত (সম্মান) নষ্ট করা হলো সবচাইতে বড় আধিক্যতা, অর্থাৎ বড় গুনাহ। (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮০০) |