/ রাজনীতি / আওয়ামী লীগ একাত্তরকে পুঁজি করে মূলত এই দেশকে শোষণ করেছে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
আওয়ামী লীগ একাত্তরকে পুঁজি করে মূলত এই দেশকে শোষণ করেছে: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
বাংলাদেশে ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী একাত্তরের তকমা লাগিয়ে ৫৪ বছর জনগণের সাথে চরম প্রতারণা করছে। জামায়াতে ইসলামীর দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মানুষকে মিথ্যা গল্প শুনিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ধ্বজাধারী আওয়ামী লীগ একাত্তরকে পুঁজি করে মূলত এই দেশকে শোষণ করেছে। গণতন্ত্রের সঙ্গে ৭১ এর পরই তারা চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে এদেশে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করেছিল। নিজ দলীয় গণমাধ্যম ব্যতিত সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল। জুমাবার (০৩ জানুয়ারি) বিকেলে ডেমরা থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দুনিয়ার কল্যাণের সাথে আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিতে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। এদেশের মানুষের সত্যিকার কল্যাণে ও মুক্তির জন্য ছাত্র জনতার বিপ্লবে অর্জিত এই নতুন বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিতে অবশ্যই জামায়াতে ইসলামীকে বেঁছে নিতে হবে। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো ৩০ বছর কেবল নিজেরা ভালো থাকার চিন্তা করেছে। অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্র থেকে বাদ দেওয়ায় দেশে নানাবিধ সেক্টরে অশান্তি তৈরি হয়েছে, যা বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সময়েও চলছে। মুসলমানদের এই বাংলাদেশে আল্লাহর আইন ছাড়া সুবিচার কখনোই আসবে না। মানুষ নিজের স্বার্থ দেখে, কিন্তু ইসলামী বিধান দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভালো থাকার নিশ্চয়তা দেয়। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় সংসদে কুরআনের আইনকে যারা বিজয়ী করতে চায় তাদেরকে পাঠাতে হবে। জনগণ যদি তা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আবারো দেশ পশ্চাতে অগ্রসর হবে। চরিত্র না থাকলে মানুষের কিছুই থাকে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা রাজনীতি করেন তাদের চরিত্রবান হতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চরিত্রহীন হলে দেশের জন্য চরম বিপদ ডেকে আনেন। সুতরাং অবশ্যই সচেতন থেকে মানুষের কল্যাণে এগিয়ে যেতে হবে। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইন, নারায়নগঞ্জ জেলা শাখা সেক্রেটারি মো. হাফিজুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও ডেমরা মধ্য থানা আমীর মোহাম্মদ আলী, ডেমরা দক্ষিণ থানা আমীর মির্জা মোঃ হেলাল, ডেমরা উত্তর মাও মোঃ মিজানুর রহমান, ডেমরা পূর্ব কে. এম. মোজাফফর হোসাইন, ডেমরা পশ্চিম মাওলানা মুহা. দেলোয়ার হোসাইন, সেক্রেটারি ডেমরা মধ্য হাসান মুহাম্মদ শিবলী, মাওলানা আবু-তালেব, মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার, হাফেজ ইসমাইল আদনান, ইঞ্জিনিয়ার তমিজ উদ্দিন, ইঞ্জি.খন্দকার কামারাম মুনীর ফুয়াদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, স্বাধীনতার পরই দেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিবেশি দেশের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে চেতনার নামে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত করেছিল ষড়যন্ত্রকারী একটি গোষ্ঠী। যারা দেশে ব্যাংক লুট, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম খুন জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে দিয়েছিল। চেতনার নামে আওয়ামী লীগ যা করেছে তা ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত চেতনা নয়। এজন্যই ২০২৪ এ ছাত্র জনতা তাদেরকে ঝেটিয়ে বিদায় করেছে। বর্তমানে একটি দল আবার দেশে চেতনার ব্যবসা করতে যাচ্ছে। তাদের খেয়াল রাখতে বলবো চাঁদাবাজ, দখলবাজের তালিকা করা আছে। সাবধান হোন, সেই তালিকায় নতুন করে আপনাদের নাম যেন যুক্ত না হয়। অযাচিত বক্তব্য বন্ধ করেন, না হলে তালিকা ছেড়ে দিলে বুঝবেন জনগণের ক্ষোভ। জনগণ জানে দেশে কারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজিতে নিমজ্জিত। আমরা তাদের বলি, আপনাদের মুখে জামায়াতের সমালোচনা মানায় না। দেশে ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ এই নতুন প্রজন্মের চাওয়া। এর বিরুদ্ধে যারা যাবে তাদের খাওয়া নেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশে। অবিলম্বে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে। দেশের মানুষ ইতোমধ্যেই জামায়তের দীর্ঘ ১৭ বছরের কুরবানীর কারণে এ দলের প্রতি জনগণ আস্থা রাখছে। ন্যায় বিচার, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে ছাত্রদের ও জামায়াতের চাওয়া এক হয়ে গেছে। তাই বন্ধু রাজনৈতিক দলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এখনো সময় আছে সোজা পথে চলুন। আব্দুস সবুর ফকির বলেন, আল্লাহু আকবার স্লোগান কখনো থামায়নি জামায়াত। এই ডেমরা এলাকায় গুলি, জেল নিশ্চিত জেনেও মিছিলে গিয়েছে হাজারো জামায়াতের কর্মীরা। দেশের প্রয়োজনে তারা সব সময় ভূমিকা পালন করবেন। কর্মী সম্মেলনের অন্যতম বিশেষ অতিথি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, চাঁদাবাজ-দখলদার যে দলেরই হোক, আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের মোকাবেলা করবো। মনে রাখবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা পালায় না। অন্য দিকে পালানো অভ্যাস আওয়ামী লীগের, সেই অভ্যাস যেন আর কোনো দল গোষ্ঠীর মাঝে দেশবাসী দেখতে চাই না। |