![]() ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ও বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে
“নেট জিরো প্রজেক্ট ও প্লাস্টিক-ফ্রি জিরো-ওয়েস্ট ক্যাম্পাস” কর্মসূচী শুরু
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিকে প্লাস্টিকমুক্ত ও শূন্য বর্জ্য ক্যাম্পাসে পরিণত করাই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য। এর জন্য উন্নত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসে বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্স। ২০২৩ সালের নভেম্বরে গঠিত এই প্ল্যাটফর্মে ব্র্যাক, ইউনিলিভার, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ ও মেরিকো বাংলাদেশের মতো প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠানে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার এবং ব্র্যাক এর জলবায়ু পরিবর্তন, নগর উন্নয়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির পরিচালক ড. মোঃ লিয়াকত আলী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি তার বক্তব্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। সেই সাথে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব পালন সম্পর্কে গুরুত্বারোপ করেন। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও পরিবেশের ক্ষতি প্রশমনের জন্য তিনি সকলকে অভ্যাস ও মানসিকতা পরিবর্তনে আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন যে, পরিবেশ সংরক্ষণে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, “ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষার একটি নতুন ধারণা তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে টেকসই উন্নয়ন।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রকৃত উৎকর্ষ তখনই আসবে যখন আমরা সবাই দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করবো।” পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণকে শুধুমাত্র পরিবেশবিদ্যা নয়, বরং সকল পাঠ্যক্রমের কেন্দ্রে রাখা উচিত, কারণ এটা আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কিত পদক্ষেপগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বর্জ্য কমানো, সম্পদের দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং ক্যাম্পাস পরিচালনায় পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করতে কাজ করছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। তিনি শিক্ষা, গবেষণা এবং কার্যকরী উদ্যোগের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন প্রচারের জন্য ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় গ্লোবাল সাউথ-এ টেকসই উন্নয়ন শিক্ষার নেতৃত্ব দিতে চায় এবং এই উদ্যোগগুলো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিবেশগত দায়িত্ব পালনে একটি অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং এই অঞ্চলে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড। এছাড়া “টুগেদার টুওয়ার্ডস অ্যা জিরো ওয়েস্ট ক্যাম্পাস” শীর্ষক বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের প্রধান সমন্বয়ক সংকলিতা সোম। এই অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ল্যাব আয়োজিত “জিরো ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি চ্যালেঞ্জ” প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিড ফান্ডিং প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা টেকসই প্রকল্প ডিজাইন ও বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা নেট জিরো প্রকল্পে অবদান রাখবে। এরপর পরিবেশবান্ধব ধারণা ও প্রকল্প তুলে ধরতে একটি পোস্টার প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়। সেখানে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বর্জ্য কমানোর উপায়, কীভাবে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব এবং প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প কী হতে পারে—এসব বিষয়ে তাদের ধারণা ও উদ্ভাবনী সমাধান উপস্থাপন করেন। এই পোস্টার প্রদর্শনীটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আউটরিচ প্রোগ্রাম ও বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালায়েন্সের সচেতনতামূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়। এই পোস্টারগুলো এর আগে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচালিত সচেতনতা প্রোগ্রামের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এসব সেশনে শিক্ষার্থীদের বর্জ্য কমানো, পরিবেশ রক্ষা এবং দায়িত্বশীলভাবে সম্পদ ব্যবহারের সম্পর্কে সচেতন করা হয়। |