![]() ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের অবহেলায় মারা গেল তিনটি গরু, মালিকের আহজারি
কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
|
![]() সাবিনা খাতুন নামে এক অসহায় নারী জানান, তার একমাত্র বিদেশি ক্রস জাতের গাভীটি ছিল তাদের সংসারের একমাত্র অবলম্বন। প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ লিটার দুধ দিতো গাভীটি। গত মাসের ২২ তারিখে পুলিশ সেটি বেওয়ারিশ হিসেবে থানায় নিয়ে আসে। সাবিনা খাতুন বলেন, "আমার অসুস্থ স্বামী আর দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ এই গাভী থেকেই চলত। এখন সব শেষ হয়ে গেল। অনেকবার পুলিশের কাছে গেছি, কিন্তু তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমার কাছে অনেক টাকা দাবি করেছে। প্রথমে গরুর খাবার বাবদ ৫০ হাজার, পরে দেড় লাখ এবং সর্বশেষ তিন লাখ টাকা দাবি করে। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাবো?" কান্নায় ভেঙে পড়া সাবিনা আরও বলেন, তার গরুর বাজার মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকার উপরে। তার সাথে থানায় ছিলেন তার বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি তুলন বেগম। তিনিও কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "গরুটি কয়েকদিন আগে একটি বাছুর জন্ম দিয়ে ছে। এখন মায়ের দুধ ছাড়া সেই বাছুরটিও হয়তো মারা যাবে।" তারা এর বিচার চান। শুধু সাবিনা খাতুন নন, শহরের সরকার পাড়ার বাসিন্দা বাবলু জানান, তার পরিবারের ৫টি গরু পুলিশ হেফাজতে আছে। এর মধ্যে আজ ১টি গরুর মৃত্যু হয়ে ছে। পাশের ঘোষপড়ার মহাদেব চন্দ্র ঘোষ জানান, তার দশটি গরু ও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এর মধ্যে দুটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। গরু দুটির বাজার মূল্য প্রায় তিন লাখ টাকার বেশি। ভুক্তভোগী বাবলুর জামাতা গোলাম রব্বানী বলেন, "আমরা আদালতের মাধ্যমে মালিকানা দাবি করে শুনানি করেছিলাম। আদালত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৩ ফেব্রæয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশকে দিলেও, ১৬ তারিখের পর থেকে গরুগুলো মরতে শুরু করে।" ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, "আমরা ১৬টি গরুর প্রকৃত মালিক যাচাই করে গত ১৩ তারিখে প্রতিবেদন দিয়েছি। গরুগুলোর অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।" সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান বলেন, "পুলিশ কর্তৃক টাকা চাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গরুর মৃত্যু বিষয়ে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ভুক্তভোগীদের আবেদন করতে বলা হয়েছে।" |