![]() সাফ আয়োজিত "প্যারিসে ৫ম বারের মতো বাণিজ্য মেলা : ঈদ বাজার"
মামুন হাসান রুবেল, প্যারিস (ফ্রান্স):
|
![]() মেলা,শব্দটির সাথে জড়িত রয়েছে আমাদের স্মৃতি বিজড়িত শৈশব। আর শৈশবের সেই স্মৃতিচারণ যদি হয় প্রবাসের মাটিতে, তাহলে আনন্দের মাত্রা যেন আরও বহু গুণে বেড়ে যায়। ব্যস্তময়, একঘেয়েমি এবং জরাজীর্ণ প্রবাস জীবনে, একটুখানি আনন্দের ছোঁয়ায় সাময়িকের জন্য হলেও জীবনকে রাঙিয়ে তোলার প্রয়াস হিসেবে সলিডারিতে আজি ফ্রান্স প্রতিবছর ঈদের আগ মুহূর্তে 'বাণিজ্য মেলা : ঈদ বাজার'আয়োজন করে থাকে। বরাবরের মতো এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। পঞ্চম বারের মতো 'বাণিজ্য মেলা : ঈদ বাজার' আয়োজিত হলো প্যারিস শহরের প্রাণকেন্দ্র রিপাবলিক চত্বরে। মেলার শুরুতেই সাফ প্রেসিডেন্ট, নয়ন এনকে, কতৃক স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মেলার উদ্বোধন কার্যক্রম শুরু করা হয়। এই মেলার সবচাইতে আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এখানে নির্দিষ্ট করে বিশেষ কোনো অতিথি নেই, বরং সকল সদস্যই অতিথি এবং যেটা সচরাচর এসব ক্ষেত্রে খুব কমই পরিলক্ষিত হয়। সকাল ১০ টা থেকেই মেলার সকল অংশগ্রহণকারীর আগমনের মধ্য দিয়ে পুরো রিপাবলিক চত্বর কানায় কানায় পরিপূর্ণ ও মুখরিত হয়ে ওঠে। মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য ভিন্নধর্মী ও আকর্ষণীয় সব অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। কুইজ প্রতিযোগিতা, খেলা সহ বাচ্চাদের জন্য ছিল বিশেষ আয়োজন।মেলায় অংশগ্রহণকারী সকল প্রবাসীদের পদচারণায় সকাল থেকে পুরো সন্ধ্যা পর্যন্ত একটা আনন্দময় ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল,যাতে কিনা ক্ষণিকের জন্য হলেও স্বদেশের ঈদের আগ মুহূর্তের স্বাদ অনুভূত হচ্ছিল। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অভিমত ব্যক্ত করছিল। তার মধ্যে একজন দর্শনার্থী ছিলেন নিশাত নওরিন,তিনি বর্তমানে একজন গৃহিণী। দুই সন্তান ও স্বামী সহ প্যারিসে আছেন আজ প্রায় এক যুগ হয়েছে, তিনি জানান প্রথমবারের মতো তিনি এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। দূর প্রবাসে পরিবার ছেড়ে মাঝে মাঝে অনেক বিষন্নতায় ভোগেন। একসাথে এত বাঙালির মিলন মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজের আনন্দময় অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন এবং প্রতিবার অংশগ্রহণের দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন। মেলায় অংশগ্রহণকারী আরেকজন তরুণ দর্শনার্থী অর্পিতা ঘোষ, এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো তিনি মেলায় অংশগ্রহণ করলেন বলে জানান। এর আগে একবার অংশগ্রহণ করে তিনি এতটাই আনন্দিত ছিল যে দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেননি। রাদিয়া তাহমিম নামের মেলায় অংশগ্রহণকারী একজন জানান তিনি সাফ কর্তৃক আয়োজিত ঈদ মেলার নিয়মিত একজন দর্শনার্থী। প্রতিবছর এই মেলায় অংশগ্রহণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। মেলার প্রতিটা বিষয় তাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করে বলে জানান। মেলার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল বিদেশীদের মাঝে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরা। তারা আমাদের সংস্কৃতি এবং পোশাকের বিশেষ প্রশংসা করেন। মেলায় প্রায় পঞ্চাশের অধিক স্টল ছিল।স্টলগুলো মূলত সাজানো হয়েছিল আমাদের দেশীয় পোশাকের রকমারি সমাহার নিয়ে,দেশীয় বিভিন্ন রকমের হাতে তৈরি খাবার তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পিঠা, আচার,ও ভর্তা। শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলারe সামগ্রী,স্কুলের যাবতীয় তথ্য সংবলিত স্টলসহ আরো অনেক কিছু। বিগত বছরের তুলনায় নিত্য নতুন, বাহারি এবং আকর্ষণীয় সব আয়োজন করাই প্রতি বছর আমাদের মূল লক্ষ্য থাকে। এবং সন্ধ্যা আটটায় সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মেলার কার্যক্রম শেষ হয়। |