![]() ওসির বিরুদ্ধে নারীর কাছে ঘুস দাবির অভিযোগ
নতুন বার্তা, বগুড়া:
|
![]() তিনি রোববার এ ব্যাপারে আগামি এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের পেশকার মো. কামরুজ্জামান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, এটা দুষ্ট লোকদের কারসাজি। তারা এখানে বালু মহালসহ বিভিন্ন ব্যাপারে সুবিধা করতে না পারে ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করাচ্ছেন। দুই বাচ্চাকে দেখতে আসলে স্বামীকে মারপিট করা হয়। তিনি সিএনজি ফেলে পালিয়ে যায়। যার সিএনজি তাকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওসি আরও বলেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি তাই এ ব্যাপারে ভীত নন। আদালত সূত্র জানা গেছে, সম্প্রতি দৈনিক আজকের প্রত্যাশা পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি আজাদুর রহমান তার ফেসবুকে ‘ধুনট থানার ওসি সাইদুল কিভাবে এক লাখ টাকায় মামলা মিটমাট করতে বলেন’ শিরোনামে ভিডিও প্রচারিত হয়। বিষয়টি ভাইরাল হলে ১৩ এপ্রিল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. লোকমান হাকিমের নজরে আসে। তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ জারি করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, বগুড়ার ধুনট উপজেলার বেলকুচি গ্রামের মৃত আবু তাহের প্রামানিকের মেয়ে তাসলিমা খাতুন তার স্বামী মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে বগুড়ার দ্বিতীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। কিছুদিন আগে মঞ্জুর আলম স্ত্রী তাসলিমা খাতুনের কাছে আসেন। এক লাখ টাকা নিয়ে ওই মামলা তুলে নিতে ও দুই বাচ্চাকে তার কাছে দিতে বলেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় স্বামী দুই বাচ্চাকে জোর করে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেওয়ায় তিনি তাসলিমাকে মারধর করেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এলে মঞ্জুর আলম সিএনজি অটো রিকশা ফেলে পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ওসি পুলিশ পাঠিয়ে সিএনজি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এছাড়া অভিযুক্ত স্বামী মঞ্জুর আলমকে থানায় ডেকে আপোষ করে দেওয়ার দিন ধার্য করেন। ওসির কথায় তাসলিমা লিখিত অভিযোগটি থানায় রেখে বাড়ি ফিরে যান। পরে জানতে পারেন ওসি লেনদেনের মাধ্যমে মঞ্জুর আলমকে থানায় ডেকে সিএনজি অটো রিকশা ফেরত দিয়েছেন। ওসি তাকে এক লাখ টাকা নিয়ে মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে আদালতের মামলা তুলে নিতে বলেন। এছাড়া আপোষ বাবদ তাকে কিছু খরচাপাতি (ঘুস) দিতে বলেন। এ সময় তাসলিমা ওসিকে জানান, আদালতে মামলা করার দিন তার বাবা স্ট্রোকে মারা গেছেন। ছোট চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই তার পক্ষে ঘুস দেওয়া সম্ভব নয়। তাসলিমা খাতুন ওসির দাবি অনুসারে ঘুস দিতে না পারা ও এক লাখ টাকা নিয়ে মামলা আপোষ করতে রাজি না হওয়ায় তিনি (ওসি) ক্ষিপ্ত হন। ওসি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তাকে কোর্টে বা যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে বলেন। এদিকে আদালত তার আদেশে বলেন, নাগরিকের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া থানার ওসির মৌলিক দায়িত্ব। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিয়ে আপোষের নামে কালক্ষেপণ করে আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লংঘন করেছেন। এছাড়া আদালতে বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া শাস্তিযোগ্য গুরুতর অপরাধ। আদেশ পাওয়ার ৩০ দিন অর্থাৎ আগামী ১৩ মের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া তাকে সার্বিক করতে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। |