আজ শনিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
 / মতামত / নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাস
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাস
এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া:
Published : Friday, 15 January, 2021 at 12:50 AM
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ : একটি জীবন-একটি ইতিহাসনবাব স্যার সলিমুল্লাহ, আমাদের ইতিহাসের দ্যুতিময় ব্যক্তিত্ব, উপমহাদেশের আজাদী ও পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের এক অগ্রনায়ক ও উজ্জল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক। যদিও আজকাল আমরা আর তার নামটি স্মরণ করতে চাই না। কেন যেন আজকাল আমরা অনেকের কৃতিত্বই ভুলে যেতে চাইছি অথবা মুছে ফেলতে চাচ্ছি। ফলে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ অনেকটা আড়ালেই যেন চলে যাচ্ছেন।

এই অঞ্চলে শিক্ষা, সমাজ, জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক চিন্তা ও কর্ম ছিল নবাব স্যার সলিমুল্লাহর জীবনের অপরিহার্য অংশ। তার পৃষ্ঠপোষকতার ফলে উনিশ শতকের শেষ ভাগ থেকে বিশ শতকের প্রায় দেড় দশক পর্যন্ত শাহবাগের নওয়াব বাড়ি শুধু রাজনৈতিক বা সামাজিক কর্মস্থলই নয়, নাটক, সঙ্গীত, চিত্রকলা, ক্রীড়া তথা দেশের প্রধান সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।

পূর্ববাংলার মানুষের অধিকার ও স্বার্থ আদায়ে বিশ শতকের গোড়ার দিকে যিনি নেতৃত্বের হাল ধরেন, তিনিই হলেন নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ। যার জন্ম ৭ জুন ১৮৭১। তাঁর বাবা ছিলেন নওয়াব স্যার আহসানুল্লাহ (১৮৪৬-১৯০১) এবং দাদা ছিলেন নওয়াব স্যার আবদুল গনী (১৮১৩-১৮৯৬)। জমিদার পরিবার হিসেবে পূর্ববাংলার  এই পরিবারের নাম ছিল অগ্রগণ্য।

ঢাকার নবাব আব্দুল গণির পুত্র নবাব আহসানউল্লাহ'র মৃত্যুর পর তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র ৩০ বছর বয়সী খাজা সলিমুল্লাহ নবাব পদে অধিষ্ঠিত হন। বাস্তববাদী এই তরুণ নবাব যথার্থ ভাবে উপলব্ধি করেছিলেন, পূর্ব বাংলার পশ্চাৎপদ ও দরিদ্র মুসলমানদের শিক্ষা দীক্ষায় উন্নত করতে না পারলে তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তি আসবে না। ঢাকার নবাব হিসাবে তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল মহল্লায় মহল্লায় নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন। এ থেকেই বোঝা যায় যে তিনি শিক্ষা বিস্তারে কতোটা মনোযোগী ছিলেন।

১৯০৩-০৪ সালে ইংরেজ সরকারের বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনার ওপর মতামত দিতে গিয়ে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯০৪ সালের ১১ জানুয়ারি পূর্ববঙ্গের হিন্দু-মুসলিম নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আহসান মঞ্জিলে এক সভা করে সরকারের বঙ্গবিভাগ পরিকল্পনার কিছু বিষয় বিরোধিতা করেন। তিনি পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের সুবিধার্থে ঢাকায় রাজধানী করে বৃহত্তর প্রদেশ গঠনের এক বিকল্প প্রস্তাবও দেন। ভাইসরয় লর্ড কার্জন পূর্ববঙ্গ সফরে এসে ১৯০৪ সালের ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নবাব সলিমুল্লাহর আতিথ্য গ্রহণ করেন। ওই সময় তাঁদের মধ্যে আলোচনার ফলে বঙ্গ বিভাগ পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন আসে। এরপর ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর বঙ্গবিভাগ কার্যকর হলে ঢাকা নতুন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখে বঙ্গবিভাগ টিকিয়ে রাখার পক্ষে জনমত সংগঠিত করার ব্যাপারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নতুন প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দিনেই তাঁর সভাপতিত্বে ঢাকার নর্থব্রুক হলে পূর্ববঙ্গের নেতৃস্থানীয় মুসলিমদের সমন্বয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভা থেকে গঠিত হয় ‘Mohammedan Provincial Union’ নামে একটি রাজনৈতিক সমিতি। সে সময়ে এ সমিতি বাঙালি মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্লাটফরম হিসেবে কাজ করে। স্যার সলিমুল্লাহ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন মফস্বল শহরে সভা করে নতুন প্রদেশের অনুকূলে জনমত সৃষ্টি করেন। অন্যদিকে কংগ্রেস এর বিরোধিতায় আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯০৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতি’ গঠন করেন। ওই বছরেই ১৪ ও ১৫ এপ্রিল ঢাকার শাহবাগে অনুষ্ঠিত সমিতির প্রথম অধিবেশনে তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯০৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ ‘Muslim All India Confederacy’ নামে একটি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁর পরিকল্পনাটি বিবেচনার জন্য উপমহাদেশের বিভিন্ন নেতা ও সমিতির নিকট প্রেরণ এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে আলীগড় আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট নেতাদের অনুরোধ করে ‘নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সমিতি’ (All India Mohammedan Educational Conference)-এর ২০তম অধিবেশন তিনি সম্পূর্ণ নিজ ব্যয়ে ঢাকায় আয়োজনের ব্যবস্থা করেন। ১৯০৬ সালের ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর নবাবের শাহবাগস্থ পারিবারিক বাগান-বাড়িতে সর্বভারতীয় মুসলিম নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই হাজারের বেশি সুধী যোগ দেন। উক্ত অধিবেশনের শেষ দিন ৩০ ডিসেম্বর নওয়াব সলিমুল্লাহর প্রস্তাবনায় ‘All India Muslim League’ গঠিত হয়। তিনি এর সহ-সভাপতি এবং গঠনতন্ত্র তৈরি কমিটির সদস্য মনোনীত হন। ১৯০৭ সালে নওয়াব সলিমুল্লাহ সংগঠনের শাখা স্থাপনের উদ্দেশ্যে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, পাবনা, কুমিল্লা প্রভৃতি স্থানে জনসভা করেন। ১৯০৭ সালের ৪ মার্চ কুমিল্লায় এ ধরনের একটি সভায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধীরা বাধা দেয়, তা সত্বেও নওয়াব সলিমুল্লাহ তাঁর কর্ম-তৎপরতা অব্যাহত রাখেন। একই বছর কলকাতায় উভয় বঙ্গের মুসলিম নেতৃবৃন্দের এক সভায় ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগ’ (All Bengal Muslim League) গঠিত হয় এবং তিনি এর সভাপতি মনোনীত হন। ১৯০৮ সালের জুন মাসে তিনি ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লীগ’ গঠন করে এর সেক্রেটারি হন। একই বছর ২৭ ডিসেম্বর অমৃতসরে নওয়াব সলিমুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ‘নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা সমিতি’র ২২তম সভা হয়। সেখানে ৩০-৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের সভায় তিনি মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচন দাবি করেন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে রাজনৈতিক আলোচনার সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। নতুন প্রদেশে হিন্দু মুসলিমদের সুসম্পর্ক রক্ষার জন্য তিনি উভয় সম্প্রদায়ের সম্পদশালী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ১৯০৯ সালের ২১ মার্চ 'Imperial League of Eastern Bengal and Assam’ গঠন করেন। এ বছরেই তিনি প্রাদেশিক মুসলিম লীগ পুনর্গঠন এবং এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯১২ সালের ২ মার্চ নওয়াব সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে কলকাতায় ডালহৌসী ইনস্টিটিউটে যুক্তবঙ্গের মুসলিম নেতৃবৃন্দের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় তাঁর প্রস্তাবের ভিত্তিতে উভয় বাংলার স্বতন্ত্র দুটি লীগকে একত্র করে ‘প্রেসিডেন্সি মুসলিম লীগ’ গঠিত হয় এবং তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই সভায় অনুরূপভাবে উভয়বঙ্গের মুসলিম সমিতি দুটিকে একত্র করে গঠিত হয় ‘বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন’। তিনি এ সংগঠনেরও সভাপতি হন। ১৯১২ সালের ৩-৪ মার্চ কলকাতায় অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের সভায় সভাপতির ভাষণে তিনি পূর্ববঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতাকারীদের যুক্তি খন্ডন করেন। তিনি মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন এবং সরকারি চাকরিতে তাঁদের সংখ্যানুপাতে কোটা ধার্যের দাবি জানান। ১৯১৪ সালের ১১-১২ এপ্রিল তিনি ঢাকায় যুক্তবঙ্গের মুসলিম শিক্ষা সমিতির অধিবেশন এবং ১৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্সি মুসলিম লীগের অধিবেশন আহবান করেন। এরপরই তিনি কার্যত কর্মক্ষেত্র থেকে অবসর নেন।

মুসলিম শিক্ষার প্রতি স্যার সলিমুল্লাহর বিশেষ আগ্রহ ছিল। স্বল্পকালের মধ্যেই তার উৎসাহে ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী ইত্যাদি শহরে মুসলিম ছাত্রদের জন্য ‘ফুলার হোস্টেল’ স্থাপিত হয়। আলীগড় কলেজ-বোর্ডিং হাউসের নমুনায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজের পাশে একটি ‘মোহামেডান হল’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত ছিল অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে। সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

বঙ্গভঙ্গ রদ এবং নবগঠিত পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ বাতিলের ফলে এ অঞ্চলের মুসলমান জনসাধারণের মধ্যে যে হতাশা নেমে আসে, তাতে প্রলেপদানের জন্য ক্ষতিপূরণস্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বলা চলে বঙ্গভঙ্গ রদ না হলে যেমন পরিণতিতে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অপরিহার্য ছিল, তেমনি আবার বঙ্গভঙ্গ রদের পরেও সে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন অনিবার্য হয়ে পড়ে।

সুতরাং বলা যায়, প্রথমত বঙ্গভঙ্গ এবং তা রদের ফলেই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এ কথাও বলা যায়, বঙ্গভঙ্গ না হলে হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতো না। বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকে ‘বঙ্গভঙ্গ রদ’ পরবর্তী পর্যায়ে মুসলমান ঘনবসতিপূর্ণ পূর্ববঙ্গের মানুষের মধ্যে যে কয়েকটি দাবি জনপ্রিয়তা পায়, ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল এর মধ্যে অন্যতম।

বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকায় ‘সর্বভারতীয় মুসলিম শিক্ষা সম্মেলন’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক শিক্ষা সমিতির’ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সম্মেলন সাড়া জাগায়। পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আওয়াজ তোলেন সর্বপ্রথম ‘মোহামেডান এডুকেশন্যাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমদ খাঁ। ১৯০৬ সালে ঢাকায় আয়োজিত সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মুসলিমপ্রধান পূর্ব বাংলার উচ্চশিক্ষার জন্য আমার প্রথম প্রস্তাব হল- এ প্রদেশে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

শিক্ষাই মুসলমানদের মুক্তির একমাত্র পথ- এ বিবেচনায় গভর্নমেন্ট সর্বান্তকরণে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য নবাব সলিমুল্লাহ ভারত সচিবের কাছে সুপারিশ করেন। তদনুসারে ১৯১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এক ইশতেহারে ভারত সরকার কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ ঘোষণা করা হয়। ঢাকা ইউনিভার্সিটি কমিটির অধীনে ইউনিভার্সিটির পাঠ্যসূচি রচনার উদ্দেশ্যে ২৫টি সাব-কমিটি গঠিত হয়। ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ বিষয়ের সাব-কমিটির সঙ্গে নবাব সলিমুল্লাহ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।

নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে বঙ্গভঙ্গকে অটুট রাখার যে আন্দোলন হয়েছিল তার প্রভাব সর্বভারতীয় রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী হয়েছিল।  ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। বঙ্গভঙ্গ রহিতকরণের ঘটনায় সলিমুল্লাহ খুবই দুঃখ পেয়েছিলেন। কিন্তু শাসকদের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে আবেদন-অনুরোধের পথেই থাকেন তিনি। তিনি অবিভক্ত বাংলার ব্যবস্থাপক পরিষদের সদস্য, ইম্পেরিয়াল কাউন্সিলের সদস্য এবং পূর্ববঙ্গ ও আসামের ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন। বঙ্গভঙ্গের পর ব্রিটিশ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ বরাবর পূর্ববঙ্গ ও ঢাকার অমর্যাদার কথা তুলে ধরে হতাশা ব্যক্ত করেন। নওয়াব আলী চৌধুরী, এ কে ফজলুল হকসহ পূর্ববঙ্গের মুসলিম নেতাদের নিয়ে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি তোলেন তিনি। সরকার এই দাবি ১৯১২ সালে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে এর বিরুদ্ধেও যে প্রবল আন্দোলন হয়েছিল, সে কথা সুবিদিত। তবে শেষ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও তিনি নিজে এর প্রতিষ্ঠা দেখে যেতে পারেননি।

নওয়াব সলিমুল্লাহ ছিলেন একজন দানশীল ব্যক্তি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তিনি অকাতরে দান করতেন। ১৯০২ সালে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠায় তিনি তাঁর পিতার দেয়া পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুসারে এক লক্ষ বারো হাজার টাকা মঞ্জুর করেন। এছাড়া কৃষি, শিল্প খাতে, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, ছাত্রাবাস নির্মাণে এবং অন্যান্য যে কোনো ধরনের সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন।

ঢাকার কারুশিল্পের উন্নয়নে তিনি প্রদর্শনীর আয়োজন করতেন। তাঁর প্রচেষ্টায় এ শিল্প নবরূপ পায়। কারুশিল্পের উন্নয়নে ১৯০৯ সালে পূর্ববঙ্গ সরকার গঠিত কমিটির তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯০২ সালে সি.এস.আই, ১৯০৩ সালে নওয়াব বাহাদুর, ১৯০৯ সালে কে.সি.এস.আই এবং ১৯১১ সালে জি.সি.এস.আই উপাধি প্রদান করে।

১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি তাঁর ঘটনাবহুল জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল কলকাতায় ৯৩ চৌরঙ্গী রোডের বাড়িতে। ১৬ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় কলকাতায় আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন ওয়েলসলি স্কোয়ার পার্কে নামাজে জানাজা শেষে ১৭ জানুয়ারি নবাব সলিমুল্লাহর লাশ ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে নবাবকে দাফন করা হয় বেগমবাজার পারিবারিক গোরস্তানে।

তার অকাল মৃত্যু নিয়ে রয়েছে নানা কৌতূহল, নানা প্রশ্ন, নানা জল্পনা-কল্পনা। অনুসন্ধানকারীদের অনুসন্ধিৎসু মন আজও খুঁজে বেড়ায় তার রহস্যময় মৃত্যু ঘটনার কারণ। কেন অকালে ঝড়ে গেলেন বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ প্রাণ, মুক্তির দূত, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রেরণা স্যার সলিমুল্লাহ? এ কথা বলতে দ্বিধা নেই ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ, ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগ গঠন এবং ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা না হলে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব থাকত কি না প্রশ্ন থাকে। তাই এটাই স্বতঃসিদ্ধ যে, বঙ্গভঙ্গ, মুসলিম লীগ গঠন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নবাব স্যার সলিমুল্লাহই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নপুরুষ।

নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'র মৃত্যু প্রসঙ্গে ইতিহাসবিদ কবি ফারুক মাহমুদ বলেন, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে বড়লাটের সাথে নবাবের মতবিরোধ দেখা দেয় এবং উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে বড়লাট নবাবকে অপমানজনক কথা বলেন। যা তার সহ্য হয়নি। নবাবের সাথে সব সময় একটি ছড়ি থাকত। সে ছড়ি দিয়ে নবাব বড়লাটের টেবিলে আঘাত করেন। এ নিয়ে চরম তির্যক বাদানুবাদ শুরু হয়। এক পর্যায়ে বড়লাটের ইঙ্গিতে তার দেহরক্ষী নবাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এবং গুরুতর আহত হন। পরে নবাবের মৃত্যু হয়। নিশ্চিদ্র প্রহরায় নবাবের লাশ ঢাকায় আনা হয়। তার আত্মীয়স্বজনকেও লাশ দেখতে দেয়া হয়নি। ১৯১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি সামরিক প্রহরায় বেগম বাজারে তাকে দাফন করা হয়। (সরকার শাহাবুদ্দিন আহমদ : আত্মঘাতী রাজনীতির তিনকাল প্রথম খণ্ড, পৃ. ২২১)

মাত্র ৪৪ বছরের জীবনে সলিমুল্লাহ সর্বভারতীয় পর্যায়ে যতটুকু প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন তা তাঁর উত্তর ও পূর্বপুরুষদের কেউই পারেননি। তিনি নিজ জনগোষ্ঠী ও পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রতি বিশেষ সহানুভূতিশীল ছিলেন। তাঁর আত্মত্যাগ যুগ যুগ স্মরণ করবে আপামর জনতা। নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'র ১০৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা।

লেখক : কলাম লেখক ও রাজনীতিক, মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ


 
চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে: হাসনাত আবদুল্লাহ
দেশে এখনও চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “দেশে এখনও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, ...
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের পাল্টা অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন
বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের পাল্টা অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন
সীমান্তে বাংলাদেশের ড্রোন ব্যবহারের পাল্টা হিসেবে ভারতও নিরাপত্তা কৌশল হিসেবে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন করেছে। ইন্ডিয়ান ডিফেন্স রিসার্চ উইংয়ের ওয়েবসাইটে এই ...
ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত লাখ ছাড়ালো
ডেঙ্গুতে আরো ৩ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত লাখ ছাড়ালো
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বশেষ এক দিনে আরো তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬১ ...
পঁচিশেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও সমমনারা
পঁচিশেই নির্বাচন চায় বিএনপি ও সমমনারা
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে ...
‘জনশক্তি’ নামে কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি: জাতীয় নাগরিক কমিটি
‘জনশক্তি’ নামে কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়নি: জাতীয় নাগরিক কমিটি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি এখনো কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করেনি এবং ‘জনশক্তি’ নামে যে রাজনৈতিক দলের কথা ...
রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পুলিশের সংস্কার ফলপ্রসূ হবে না: সিজিএস সংলাপে বক্তারা
রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পুলিশের সংস্কার ফলপ্রসূ হবে না: সিজিএস সংলাপে বক্তারা
সংস্কার করতে হলে পুলিশকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। পুলিশের মানসিক স্বাস্থ্যে ঘাটতি আছে। পুলিশকে বর্তমান প্রযুক্তিগুলো শেখাতে হবে। জনগণেরও পুলিশকে সাহায্য ...
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বছর শেষে স্মার্টফোনপ্রেমিদের দারুণ খবর দিচ্ছে গ্লোবাল স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো। প্রায় ২ বছর পর আবারো দেশে আসছে ভিভোর ফ্লাগশিপ ...
চট্টগ্রাম সমিতি ইউকে ও অ্যাশ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে 'ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প' অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম সমিতি ইউকে ও অ্যাশ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে 'ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প' অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম সমিতি ইউকে, চট্টগ্রামের আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন (অ্যাশ ফাউন্ডেশন) ও সেন্ড অ্যা লিটল হোপ ইউকে এর যৌথ উদ্যোগে সর্বসাধারণের ...
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিশন। দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের কার্যক্রম ও আটক ব্যক্তিদের সম্ভাব্য পরিণতি ...
১০
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না : ড. ইউনূস
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না : ড. ইউনূস
বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থা আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি উল্লেখ করে বলেন, ধর্মের ...
 
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ৩১ টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ৩১ টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্ত এলাকায় ৩১ টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ...
সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : খায়ের ভূঁইয়া
সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন : খায়ের ভূঁইয়া
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া বলেছেন, অবিলম্বে রোডম্যাপ গঠন করে, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে ও জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত ...
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জোড়া খুনের ঘটনায় ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম আন্দোলনকারীদের
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জোড়া খুনের ঘটনায় ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম আন্দোলনকারীদের
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নির্দোশ কিশোর মাসুদ ও রায়হানকে ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করে ...
সিএমকেএস ফরিদপুরের আয়োজনে বিশেষ এ্যাডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত
সিএমকেএস ফরিদপুরের আয়োজনে বিশেষ এ্যাডভোকেসী সভা অনুষ্ঠিত
হিজড়া ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরুষ জনগোষ্ঠিদের চিকিৎসা সেবা গ্রহণে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহে একটি ইতিবাচক ও  সেবাবান্ধন পরিবেশ নিশ্চিত করা, ...
মোদি ও প্রিয়াঙ্কার মন্তব্য বাংলাদেশের জন্য অবমাননা : বাংলাদেশ ন্যাপ
মোদি ও প্রিয়াঙ্কার মন্তব্য বাংলাদেশের জন্য অবমাননা : বাংলাদেশ ন্যাপ
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাল-সবুজের পতাকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ”টুইট ও ...
আমি পালিয়ে যেতে চাইনি: প্রথম বিবৃতিতে আসাদ
আমি পালিয়ে যেতে চাইনি: প্রথম বিবৃতিতে আসাদ
দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না বলে দাবি করেছেন বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে সিরিয়া ছেড়ে রাশিয়ায় পাড়ি জমানো সাবেক ...
পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে সারাদিন যা হলো
পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে সারাদিন যা হলো
গণভোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাদ দিয়ে এক যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানে যে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছিল, তার কিছু ...
স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত মিলা
স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত মিলা
শ্রোতাপ্রিয় সংগীতশিল্পী মিলা ইসলাম। তার কণ্ঠের একাধিক জনপ্রিয় গান রয়েছে। মাঝে স্টেজ শোতে খুব একটা দেখা না গেলেও, বর্তমানে তিনি ...
নীরব-সরবে ‘সমালোচিত’ দুদক
নীরব-সরবে ‘সমালোচিত’ দুদক
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা পেরিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে চলছে রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যমান সংকট থেকে ...
১০
আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত – সংকট ও সম্ভাবনা
আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্ত – সংকট ও সম্ভাবনা
আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে একের পর এক জয়ের মুখ দেখছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ...
সম্পাদক ও প্রকাশক: ইউসুফ আহমেদ (তুহিন)
প্রকাশক কর্তৃক ৭৯/বি, ব্লক বি, এভিনিউ ১, সেকশান ১২, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬ থেকে প্রকাশিত ও ৫২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, ঢাকা ১১০০ থেকে মুদ্রিত
বার্তাকক্ষ : +৮৮০১৯১৫৭৮৪২৬৪, ই-মেইল editor@natun-barta.com, Web : www.Natun-Barta.com.com