/ সারাদেশ / সন্ত্রাসী হুমকি: বিপর্যস্ত বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসা
সন্ত্রাসী হুমকি: বিপর্যস্ত বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসা
নতুন বার্তা, বান্দরবান:
|
তিন পার্বত্য জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য মূলত পর্যটনকে ঘিরেই। কিন্তু কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ পাহাড়ি কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হুমকির কারণে সেই ব্যবসা-বাণিজ্য এখন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায়ীরা আছেন মহাসংকটে। পর্যটন স্পটগুলোতে যেসব চাঁদের গাড়ি (পিকআপ জাতীয় বাহন) এবং জলপথে বোট চলাচল করে, সেগুলোর চালক ও মালিকরা এখন বেকার দিন কাটাচ্ছেন। সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়েছেন ট্যুরিস্ট গাইডরা। হোটেল, রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা ৫০ ভাগ ছাড় দিয়েও পর্যটক পাচ্ছেন না। ফলে চরম লোকসানের মুখে আছেন তারা। তবে রহস্যজনক কারণে কোনও পক্ষই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে সেটাও সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ (কেএনএফ) জঙ্গিদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর গত বছরের মাঝামাঝি নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এরপর ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এতে রুমা উপজেলার বগালেক, থানচি উপজেলার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং, সাকা হাফং, নাফাখুম, অমিয়াখুম, ভেলাখুম, সাতভাইখুম, আন্ধারমানিক (নারিষ্যা ঝিরি), মদক ঝরনা, বাকলাই ঝরনাসহ অসংখ্য পর্যটন স্পট বন্ধ হয়ে যায়। সব পর্যটন স্পটই দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে। যে কারণে এসব এলাকায় যাওয়ার সময় পর্যটকরা স্থানীয় গাইডদের সহায়তা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে পর্যটক যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর তিন শতাধিক ট্যুরিস্ট গাইড, বোটচালক ও পরিবহন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। গত ১২ জুলাই পর্যটক যাতায়াতের ওপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও কারও আতঙ্ক কাটেনি। কিছু সংখ্যক পর্যটক বান্দরবানে গেলেও পরিবহন চালকরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। পাহাড়ের নতুন আপদ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে, তাদের কথিত দাবিগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত যাতে কেউ পর্যটকদের নিয়ে কোনও স্পটে না যায়। দাবিগুলোর একটি হচ্ছে পর্যটন স্পটগুলো তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এর আগে কেউ স্পটে গেলে যেকোনও ধরনের ক্ষতির জন্য তারা দায় নেবে না বলেও জানিয়ে দেয়। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফ-এর হুমকির কারণে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের দেখা মিলছে না। বান্দরবানের আশপাশের দুয়েকটি স্পটে খুবই স্বল্প সংখ্যক পর্যটককে দেখা যায়। কিন্তু পাহাড়ি এই সন্ত্রাসীদের কারণে স্থানীয় পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা কেউ তাদের নিয়ে যেতে চান না। কারণ, যারা যাবেন তারা নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে যাবেন এই আশঙ্কায়। তাদের অনেকেই এখন দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পানসি বোটচালক উথোয়াই মারমা বলেন, ‘পর্যটক না আসায় আমাদের আয় রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। নিরাপত্তা সংকট কেটে গেলে যখন পর্যটকরা আসা শুরু করবেন, তখন আমরা আবারও হয়তো আয়-রোজগার করতে পারবো।’ তিন পার্বত্য জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য মূলত পর্যটনকে ঘিরেই। কিন্তু কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ পাহাড়ি কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হুমকির কারণে সেই ব্যবসা-বাণিজ্য এখন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায়ীরা আছেন মহাসংকটে। পর্যটন স্পটগুলোতে যেসব চাঁদের গাড়ি (পিকআপ জাতীয় বাহন) এবং জলপথে বোট চলাচল করে, সেগুলোর চালক ও মালিকরা এখন বেকার দিন কাটাচ্ছেন। সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়েছেন ট্যুরিস্ট গাইডরা। হোটেল, রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা ৫০ ভাগ ছাড় দিয়েও পর্যটক পাচ্ছেন না। ফলে চরম লোকসানের মুখে আছেন তারা। তবে রহস্যজনক কারণে কোনও পক্ষই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে সেটাও সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ (কেএনএফ) জঙ্গিদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর গত বছরের মাঝামাঝি নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এরপর ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এতে রুমা উপজেলার বগালেক, থানচি উপজেলার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং, সাকা হাফং, নাফাখুম, অমিয়াখুম, ভেলাখুম, সাতভাইখুম, আন্ধারমানিক (নারিষ্যা ঝিরি), মদক ঝরনা, বাকলাই ঝরনাসহ অসংখ্য পর্যটন স্পট বন্ধ হয়ে যায়। সব পর্যটন স্পটই দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলে। যে কারণে এসব এলাকায় যাওয়ার সময় পর্যটকরা স্থানীয় গাইডদের সহায়তা নিয়ে থাকেন। কিন্তু সন্ত্রাসী হামলার হুমকির কারণে পর্যটক যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর তিন শতাধিক ট্যুরিস্ট গাইড, বোটচালক ও পরিবহন শ্রমিক কর্মহীন হয়ে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। গত ১২ জুলাই পর্যটক যাতায়াতের ওপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও কারও আতঙ্ক কাটেনি। কিছু সংখ্যক পর্যটক বান্দরবানে গেলেও পরিবহন চালকরা যেতে ভয় পাচ্ছেন। পাহাড়ের নতুন আপদ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে, তাদের কথিত দাবিগুলো মেনে না নেওয়া পর্যন্ত যাতে কেউ পর্যটকদের নিয়ে কোনও স্পটে না যায়। দাবিগুলোর একটি হচ্ছে পর্যটন স্পটগুলো তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। এর আগে কেউ স্পটে গেলে যেকোনও ধরনের ক্ষতির জন্য তারা দায় নেবে না বলেও জানিয়ে দেয়। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কেএনএফ-এর হুমকির কারণে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের দেখা মিলছে না। বান্দরবানের আশপাশের দুয়েকটি স্পটে খুবই স্বল্প সংখ্যক পর্যটককে দেখা যায়। কিন্তু পাহাড়ি এই সন্ত্রাসীদের কারণে স্থানীয় পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা কেউ তাদের নিয়ে যেতে চান না। কারণ, যারা যাবেন তারা নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে যাবেন এই আশঙ্কায়। তাদের অনেকেই এখন দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। পানসি বোটচালক উথোয়াই মারমা বলেন, ‘পর্যটক না আসায় আমাদের আয় রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। নিরাপত্তা সংকট কেটে গেলে যখন পর্যটকরা আসা শুরু করবেন, তখন আমরা আবারও হয়তো আয়-রোজগার করতে পারবো।’ রুমা উপজেলার ট্যুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছি। বান্দরবানসহ রুমা উপজেলায় পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও নানা শঙ্কায় পর্যটক আসছেন না। তাই আমাদের আয়ের একমাত্র পথ এখনও বন্ধ।’ পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের দফতর সম্পাদক মো. শাহজালাল রানা বলেন, ‘কেএনএফ সন্ত্রাসীরা যেকোনও সময় পার্বত্যাঞ্চলে থাকা নিরীহ পাহাড়ি ও বাঙালিদের ওপর হামলা করতে পারে। এ কারণে সবাই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই সুযোগ বুঝে নৃশংস হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে বর্তমানে সব ধরনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ। ঠিকাদাররা কাজ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এ এলাকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে পর্যটন ও কৃষি। তাদের হুমকির কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে।’ রুমা উপজেলার বগালেক পাড়ার ‘কারবারি’ মনথন বম বলেন, ‘আতঙ্কে পর্যটক না আসার কারণে সবার ক্ষতি হচ্ছে। পর্যটকদের কাছে থাকার জায়গা ভাড়া দিয়ে তারা প্রচুর আয় করতেন। এখন সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এখন পাহাড়িরা চাষাবাদ করে কোনোরকমে জীবিকা নির্বাহ করছেন।’ থানছি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আবুল মনসুর জানান, পর্যটক ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের কথা চিন্তা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার কারণে দুর্গম এলাকা ব্যতীত কাছের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের ভ্রমণে উৎসাহিত করছে প্রশাসন। ট্যুরিস্ট পুলিশের বান্দরবান জোনের সহকারী পুলিশ সুপার নকিবুল ইসলাম বলেন, “গত ১২ জুলাই থেকে পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে নানা আশঙ্কায় পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। ছয় থেকে সাতশ’ চাঁদের গাড়ি চলাচল করে বান্দরবানের বিভিন্ন স্পটে। সেগুলোর চালকরাও নিরাপত্তাহীনতার কারণে যেতে চায় না।’ তিনি বলেন, ‘কেএনএফ-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আলোচনা করছেন। দেখা যাক কী হয়। যে কারণে তারা পর্যটকদের নিষেধও করছেন না। আবার উৎসাহও দিচ্ছেন না। বর্তমান সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ও সড়কে ধস হচ্ছে। এতে পাহাড়ি জনপদগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সে কারণেও এ সময়ে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’ কেএনএফ-এর সঙ্গে আলোচনার জন্য বান্দরবানে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে ওই কমিটি দুই দফা কেএনএফ-এর সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করেছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী হুমকির কারণে বান্দরবানে পর্যটক নিষিদ্ধ ছিল। যে কারণে বান্দরবানের ব্যবসা-বাণিজ্যেও মন্দা চলছে। কয়েক দিন আগে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও এখন পর্যন্ত আতঙ্ক কাটেনি। আমরা চেষ্টা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’ |