/ সারাদেশ / কুড়িগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে বন্যা, প্রস্তুতির পরামর্শ পাউবোর
কুড়িগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে বন্যা, প্রস্তুতির পরামর্শ পাউবোর
নতুন বার্তা, কুড়িগ্রাম:
|
কুড়িগ্রামে আবারও ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে আগস্টের শেষ সপ্তাহে জেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় আরেকটি বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বরাতে পাউবো জানিয়েছে, অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে আগস্টের শেষ সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছাতে পারে। এর ফলে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ ও চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলসমূহ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় এসব অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকাল ৩টায় গত ২৪ ঘণ্টায় দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে তিস্তার পানি কিছুটা ওঠানামা করে বিপৎসীমায় পৌঁছায়। ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া ও চিলমারী পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ও ৭৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে ওই সময়ে ধরলার পানি কিছুটা কমেছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নদনদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানায় পাউবো। সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা আহ্বানের পাশাপাশি বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর তালিকা তৈরি, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত এবং গো খাদ্য মজুত রাখার পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। একইসঙ্গে বাঁধের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং ভগ্ন রাস্তা-বাঁধ মেরামতের ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ভারতের আসাম ও অরুণাচলে ভারী বৃষ্টির কারণে উজানের ঢল ও স্থানীয় বৃষ্টিপাতে নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমায় পৌঁছাতে পারে। ফলে জেলার সদরের কিছু অংশ, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে স্বল্পমেয়াদী বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে। পানি বিপৎসীমায় পৌঁছালেও খুব বড় বন্যার আশঙ্কা নেই।’ সম্ভাব্য বন্যার খবরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুতি রেখেছি। খাদ্য সহায়তা, উদ্ধার নৌকা ও আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামে তিন দফা পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদনদী অববাহিকার চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এর মধ্যে গত জুলাইয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি স্বল্পমেয়াদী বন্যার কবলে পড়ে জেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। আগস্টের শেষ আবারও বন্যা দেখা দিলে এটি জেলায় দ্বিতীয় দফায় বন্যা হবে। ইতোমধ্যে জেলায় ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। |