/ সারাদেশ / কেশবপুরে বিএনপির নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা রক্ষা পেতে বিএনপি নেতার দৌড়ঝাঁপ
কেশবপুরে বিএনপির নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা রক্ষা পেতে বিএনপি নেতার দৌড়ঝাঁপ
সোহেল পারভেজ, কেশবপুর::
|
যশোর কেশবপুর উপজেলার ১১ হাসানপুর ইউনিয়নে চাঁদা দাবি, জমি জবর-দখলসহ সংঘবদ্ধভাবে বিভিন্ন ধরনের অশান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের (অনলাইন) সহ-সম্পাদক কবিরুল ইসলামের পিতাকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত আতিয়ার রমান যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বুধবার সন্ধ্যায় ভান্ডার খোলা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেশবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে মামলা নং ০৩। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, চাঁদা দাবি, জমি জবর দখলসহ বিভিন্ন ধরনের অশান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় বিএনপির কর্মী ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের (অনলাইন) সহ-সম্পাদক কবিরুল ইসলামের বাবা আতিয়ার রহমানকে হাসানপুর ইউনিয়নের বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত আহবায়ক আলমগীর হোসেন,তার আপন ভাই জাকির হোসেন পান্না, আসদুল ইসলাম, আমির আলী, সোহরাব আলী, আলম সরদার মেহেদী হাসান, অলিয়ার রহমান, হুমায়ুন কবির, আব্দুল্লাহসহ অজ্ঞাতনামা ১২-১৪ সন্ত্রাসীরা ভুক্তভোগীকে রামদা, জিআই পাই, লোহার রড বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে আতিয়ার রহমান গুরুতর আহত হয়। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয় কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা অমেলন্দু দাস আপু সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি যে বা যারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে তাদের বিরুদ্ধে দল কঠিন সিদ্ধান্ত নিবে। বিষয় টি নিয়ে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম কে জানানোর জন্য বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ও ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের ঘটনা দলের জন্য অনেক ক্ষতি কারণ ও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, আমি চাই যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। হামলার বিষয়ে সাক্ষাৎ হয় হাসানপুর ইউনিয়নের বিএনপি'র যুগ্ন আহবায়ক মাহাবুবুর রহমান মল্লিক ও মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, ভান্ডার খোলা বাজারে আতিয়া রহমান নামে এক বয়ষ্ক ভদ্রলোককে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আলমগীর সহ আলমগীরের ভাই ও তার কিছু গড়া বাহিনী নিয়ে আতিয়ার কে মারাত্মকভাবে জখম করেছে। আলমগীর খুব দুর্ধর্ষ তার জন্য দলের ক্ষতি ছাড়া বিএনপি'র কোন ভালো কিছু আশা করা যায় না। সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা হয়েছিল আলমগীরের ভাই সক্রিয়ভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলো বলে আমরা জানতে পেরেছি। তার ভাই আওয়ামী লীগের নেতাদের ছত্র ছায়ায় থেকে বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে। জেলা নেতৃবৃন্দের কাছে আবেদন তদন্তপূর্বক অপরাধী দেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। কেশবপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য আসাদুজ্জামান রুমি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের ইউনিয়ন বিএনপি'র একজন কর্মী আতিয়ার রহমান চাচাকে, বেধড়কভাবে মারপিট করেছে। আলমগীর হোসেন ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক থাকার যোগ্যতা আছে বলে আমি মনে করি না, কারণ সে সব সময় ইউনিয়ন বিএনপির মধ্যে লবিং গ্রুপিং করে রাখছে। তার কথা হল সে একাই রাজনীতি করবে। তাই দলে এমন কাউকে,ইউনিয়নের বিএনপি'র দায়িত্ব দেয়া উচিৎ হবে না বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে আহত মো. আতিয়ার রহমানের ছেলে সাংবাদিক কবিরুল ইসলাম বলেন, শত শত ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে সদ্য অর্জিত স্বৈরাচারমুক্ত বাংলায় কিছু দুর্বৃত্ত চাঁদাবাজি, জমি দখলের মতো অপকর্মে জড়িত হয়েছে। আমার পিতা এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় তার ওপর হামলা হয়। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করি। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আসামিরা কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদের সমর্থক। সেই দাপটে এই চক্রটি এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে করে চলেছে। হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তিনি ১০ কিলোমিটার দূরে থাকেন। ওখানকার লোকজনের সঙ্গে কথা বললে ঘটনা জানা যাবে। মারধর করার অধিকার আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নাই।’ এসময় তিনি বলেন, যদি কেউ কোনো অন্যায় করে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ব্যবস্থা নেওয়ার মালিক না। আমি কীভাবে ব্যবস্থা নিবো। ব্যবস্থা নেবে জেলা বিএনপি, কেন্দ্রীয় বিএনপি। কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে হাসানপুর ইউনিয়ন বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত আহবায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। খুব ব্যস্ত আছি। আবার ফোন করলে তিনি বলেন তাদের সঙ্গে মিমাংসা হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পরে কথা হবে। কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। |