আজ শনিবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
 / ফিচার / ভারতে ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা সাত বোনের সংসারে বাংলাদেশের ভূমিকা কী?
ভারতে ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা সাত বোনের সংসারে বাংলাদেশের ভূমিকা কী?
নতুন বার্তা, ঢাকা:
Published : Thursday, 12 September, 2024 at 12:49 AM
ভারতে ‘সেভেন সিস্টার্স’ বা সাত বোনের সংসারে বাংলাদেশের ভূমিকা কী?বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক দু’দিন আগে ভারতীয় চ্যানেল এনডিটিভি-কে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “আপনি যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলেন, তাহলে সেই অস্থিরতার আঁচ কিন্তু বাংলাদেশের বাইরেও মিয়ানমার, সেভেন সিস্টার্স, পশ্চিমবঙ্গ – সর্বত্রই অগ্ন্যুৎপাতের মতো ছড়িয়ে পড়বে।”
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের কয়েক দিনে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদপত্র বা চ্যানেলকেও দেওয়া একাধিক সাক্ষাৎকারেও তিনি মোটামুটি একই ধরনের সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন, আর প্রতিবারই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বোঝাতে ব্যবহার করেছিলেন এই ‘সেভেন সিস্টার্স’ শব্দবন্ধটি।
লক্ষণীয় বিষয় হল, ভারতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোকে বোঝাতে এখন কিন্তু ‘নর্থ-ইস্ট’ বা ‘নর্থ-ইস্টার্ন স্টেটস’ কথাটাই বেশি ব্যবহৃত হয়। সেভেন সিস্টার্স কথাটা এককালে জনপ্রিয় হলেও এখন ভারতীয়রা সেটি প্রায় ভুলতেই বসেছেন।
অথচ ভারতে ‘সেভেন সিস্টার্স’ কথাটা ইদানীং প্রায় অপ্রচলিত হলেও বাংলাদেশে ওই অঞ্চলটিকে বোঝাতে এখনও কিন্তু ওই শব্দবন্ধটিই সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত।
এমন কী দিনকয়েক আগে বাংলাদেশে আকস্মিক বন্যার পর কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে শত শত ছাত্রকে স্লোগান দিতে শোনা গিয়েছিল, “বন্যায় যদি মানুষ মরে, সেভেন সিস্টার্স থাকবে না রে!” সেই দৃশ্যের ভিডিও প্রবল বেগে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল ভারতেও।
তথাকথিত ‘সেভেন সিস্টার্সে’র ভারতের সঙ্গে যুক্ত থাকা না-থাকার প্রশ্নে বাংলাদেশের যে একটা প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে, সম্ভবত সেই ইঙ্গিতই প্রচ্ছন্ন ছিল শিক্ষার্থীদের ওই স্লোগানে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও বারবার এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন।
আসলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ স্থল-সীমান্ত, তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই কিন্তু এই সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে! আরও নির্দিষ্ট করে বললে, সাতটির মধ্যে চার বোন – আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সঙ্গে।
ইতিহাস বলে, সেভেন সিস্টার্স-ভুক্ত এই রাজ্যগুলোর বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী অতীতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকেই অবাধে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। আবার যখন ওই নেতাদের বাংলাদেশ সরকার ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে, তাদের সক্রিয়তাতেও দেখা গেছে ভাঁটার টান!
সেভেন সিস্টার্সের সবচেয়ে বড় রাজ্য আসামের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা একাধিকবার প্রকাশ্যেই বলেছেন, বাংলাদেশ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আলফা-র নেতাদের ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে বলেই আসাম আজ এত ‘শান্তিপূর্ণ’, রাজ্যের লোক ‘রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন’!
ফলে ভারতের এই অঞ্চলটির ওপর প্রতিবেশী বাংলাদেশের যে একটা ‘স্ট্র্যাটেজিক লিভারেজ’ বা কৌশলগত সুবিধা আদায়ের পরিসর আছে, সে বিষয়ে পর্যবেক্ষকরা প্রায় সবাই একমত।
কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে ‘সেভেন সিস্টার্সে’র উৎপত্তি ও নামকরণ হয়েছিল কীভাবে?
‘সাত বোনে’র এই পরিবারে কেন বারেবারে ভারত-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে? সার্বিক জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিতেই বা ভারতের জন্য কেন এই অঞ্চলটি এত সংবেদনশীল?

যে নাম পছন্দ হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীরও
১৯৭১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ‘নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিল অ্যাক্টে’র অধীনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি অঙ্গরাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়, যার সদর দফতর স্থাপিত হয়েছিল শিলংয়ে।
এই রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো ছিল - আসাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা ও মিজোরাম।
এর মধ্যে ত্রিপুরা, মণিপুর ও মেঘালয় ১৯৭২-র ২১শে জানুয়ারি ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায়। আসাম ও নাগাল্যান্ড আগে থেকেই ছিল ভারতের পূর্ণ অঙ্গরাজ্য, আর ওই তারিখে অরুণাচল প্রদেশ (তখন নাম ছিল ‘নেফা’) ও মিজোরাম ছিল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদায়।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলাতে সে সময় টাইমস অব ইন্ডিয়ার সংবাদদাতা ছিলেন জ্যোতি প্রসাদ শইকিয়া, যিনি জে পি শইকিয়া নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
নতুন রাজ্য হিসেবে ত্রিপুরার আত্মপ্রকাশের দিনে তিনি যে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন, তাতেই তিনি না কি প্রথমবারের মতো গোটা অঞ্চলটিকে ‘ল্যান্ড অব সেভেন সিস্টার্স’ বলে অভিহিত করেন। পরে ওই একই নামে তিনি একটি বইও লিখেছিলেন।
জনশ্রুতি হল, এই ‘সেভেন সিস্টার্স’ কথাটি না কি তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীরও খুব পছন্দ হয়ে গিয়েছিল।
ভারতের মানচিত্রের এক কোণায় সাতটি রাজ্য বা অঞ্চলকে এক কথায় বর্ণনা করতে তখন সরকারি কাগজপত্রেও ধরে ধীরে এই শব্দটির প্রয়োগ শুরু হয়।
ভারতের পর্যটন বিভাগ ওই অঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান নিয়ে সেই আমলে যে ছোট ছোট পুস্তিকা বের করত, সেখানেও তখন সেভেন সিস্টার্স কথাটি খুব ব্যবহৃত হত।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বিশেষজ্ঞ ও সুপরিচিত লেখক-গবেষক সঞ্জয় হাজারিকা বলছিলেন, “সাংবাদিক জে পি শইকিয়া এক সময় চাকরি ছেড়ে আসামের তখনকার মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা শরৎ চন্দ্র সিনহা-র উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন।”
“১৯৭৬ সালে গুয়াহাটিতে এআইসিসি-র যে অধিবেশন হয়েছিল, সেখানে সিনহা প্রকাশ্যে এই সেভেন সিস্টার্স কথাটি ব্যবহার করেন। আমরা ধরে নিতেই পারি এর পেছনে নিশ্চয়ই জে পি শইকিয়ার ভূমিকা ছিল।”
২০২০ সালের ডিসেম্বরে গুয়াহাটিতে জে পি শইকিয়ার মৃত্যুর পর আসামের ‘দ্য সেন্টিনেল’ পত্রিকা যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, তাতেও ‘সেভেন সিস্টার্স’ কথাটির স্রষ্টা হিসেবে তাকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ২০০১ সালে তদানীন্তন অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ‘ডোনার’ নামে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠন করে, তাতে আগেকার সাতটি রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করা হয় সিকিমকেও। তখন থেকে অনেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘সাত বোন এক ভাই’য়ের দুনিয়া বলেও বর্ণনা করতে থাকেন।
আটটি রাজ্যের সমাহারে গঠিত এই অঞ্চলটিকে বিজেপি সরকার আবার ‘অষ্টলক্ষ্মী’ বলেও ডাকতে শুরু করে, আর তখন থেকেই ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে পুরনো সেই ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামটির ব্যবহার।

শিলিগুড়ি করিডর তথা ‘চিকেনস নেক’
ভারতে সাড়ে চার বছর আগে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যখন প্রতিবাদ তুঙ্গে, তখন শার্জিল ইমাম নামে এক তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট এক জনসভায় বলেছিলেন, ভারতের ‘চিকেনস নেক’ অবরোধ করে আসামকে পাকাপাকিভাবে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেই সরকার তাদের দাবি মানতে বাধ্য হবে!
মুম্বাই আইআইটি ও দিল্লির জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্র, মেধাবী শার্জিল ইমামের সেই ভাষণের ভিডিও ভাইরাল হয় – যার জেরে দেশদ্রোহের অভিযোগে তাকে পরে জেলেও যেতে হয়, আর সেই কারাবাস থেকে তিনি আজও মুক্তি পাননি।
আসলে শার্জিলের প্রধান ‘অপরাধ’ ছিল, প্রকাশ্য ভাষণে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার খুব দুর্বল একটা জায়গায় তিনি আঘাত দিয়ে ফেলেছিলেন! বলেছিলেন 'চিকেনস নেক' বা মুরগির ঘাড় মটকে দেওয়ার কথা!
একদা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাকি দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে রেখেছে যে সরু অংশটা, সেটাই আসলে ‘শিলিগুড়ি করিডর’ নামে পরিচিত।
ভারতের মানচিত্রে শিলিগুড়ি শহরের কাছে অবস্থিত এই করিডরটা অনেকটা বাঁকানো মুরগির ঘাড়ের মতো দেখায় বলে এই জায়গাটাকে অনেকে ‘চিকেনস নেক’ বলেও বর্ণনা করেন।
এই করিডরের সবচেয়ে সরু অংশটা মাত্র ২১ কিলোমিটার চওড়া, যার আশেপাশেই রয়েছে অন্তত চারটি দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এই দেশগুলো হল চীন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ।
বাকি ভারতের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সের ভৌগোলিক সংযোগের এই সূত্রটায় যেহেতু ‘স্ট্র্যাটেজিক ডেপথে’র অভাব রয়েছে, সেটাই কিন্তু নিরাপত্তার দৃষ্টিতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে একটা ‘ভালনারেবল’ বা বিপজ্জনক অবস্থায় রেখেছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক তথা ভারতীয় সেনার সাবেক মেজর জেনারেল ভি এস রানাডে মনে করেন, এই শিলিগুড়ি করিডরের ‘স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব’ হয়তো ভারত উপলব্ধি করেছে – কিন্তু অন্য দিকগুলো দিয়ে সেভেন সিস্টার্সকে আজও বাকি দেশের সঙ্গে আত্মীকৃত করা যায়নি।
দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক আইডিএসএ-র জার্নালে ‘স্লেন্ডার ইজ দ্য করিডর’ নামে এক প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন, “যে ইস্যুগুলো একটা দেশের বিভিন্ন অংশকে সংযুক্ত করে, সেটা এখানে কোথায়? এই করিডর দিয়ে আমরা কি (সেভেন সিস্টার্সকে) রাজনৈতিকভাবে বা জাতীয় আবেগের দিক থেকে জুড়তে পেরেছি?”
শিলিগুড়ি করিডরের কাছেই অবস্থিত দার্জিলিং-এর আদি বাসিন্দা ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা আবার এই সরু করিডরকে ভারতের জন্য একটি ‘সুযোগ’ হিসেবে দেখতে চান।
মি শ্রিংলা বলছেন, “ভারতের নেইবারহুড ফার্স্ট পলিসি (‘প্রতিবেশীরা সবার আগে’) আর ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি এখানে এসেই মিশেছে। 
তবে যে দৃষ্টিতেই দেখা হোক, এই করিডর বা ‘চিকেনস নেক’ই যে সেভেন সিস্টার্সকে বাকি ভারতের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা অবস্থানে রেখেছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয়তা
ভারতের সেভেন সিস্টার্সের নৈসর্গিক শোভা, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে – কিন্তু পাশাপাশি বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলটি যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে বিক্ষুব্ধ থেকেছে, সেটাও কিন্তু বাস্তবতা।
বস্তুত সাতচল্লিশে ভারতের স্বাধীনতার পর (কাশ্মীরকে বাদ দিলে) দেশের যেখানে সবার আগে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়, সেটি ছিল নাগাল্যান্ড। এ জেড ফিজো-র নেতৃত্বে নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল (এনএনসি) তাদের স্বাধীনতার লড়াই শুরু করে ১৯৫০-র দিকেই।
পরে এনএনসি ভেঙে এনএসসিএন তৈরি হয়েছে, সেই সংগঠনও মুইভা আর খাপলাং-এর অনুগত গোষ্ঠীতে ভেঙে দু’টুকরো হয়েছে – কিন্তু সার্বভৌম ‘নাগালিম’ বা গ্রেটার নাগাল্যান্ডের দাবিতে নাগাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কিন্তু আজও পুরোপুরি থামেনি।
একইভাবে বিগত পঞ্চাশ বছরের বিভিন্ন সময়ে মণিপুরে কুকি-রা, আসামে ‘আলফা’, ডিমা-হাসাও বা একাধিক বোড়ো গোষ্ঠী, মিজোরামে এমএনএফ এবং ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিভিন্ন উপজাতীয় গোষ্ঠী ভারত ও ভারতীয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানা দাবিতে অস্ত্র ধরেছে।
পাশাপাশি, এই রাজ্যগুলোর নিজেদের মধ্যেও সীমানা ও আরও নানা প্রশ্নে বারেবারেই বিরোধ দেখা দিয়েছে। আসাম-মেঘালয়, আসাম-ত্রিপুরা, অরুণাচল-আসাম কিংবা ত্রিপুরা-মিজোরামের মধ্যে দ্বন্দ্ব, অবরোধ কিংবা পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনাও বিরল নয় মোটেই।
সোজা কথায়, ‘সাত বোনে’র সংসারেও যে সব সময় শান্তি ছিল অথবা বোনে বোনে খুব মিল ও সদ্ভাব – সেটাও কিন্তু সত্যি নয় একেবারেই। উত্তর-পূর্বের শিলচর শহরের বাসিন্দা ও লেখক-অধ্যাপক জয়দীপ বিশ্বাস এর একটা সহজ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
তিনি বলছিলেন, “আসলে বাকি ভারত এই সেভেন সিস্টার্সকে বোধহয় একটা ‘হোমোজিনিয়াস ইউনিট’ বা একই রকমের কাঠামোর অংশ হিসেবে দেখে। কিন্তু এই এলাকাটার মধ্যে কত যে বৈচিত্র্য বা বৈপরীত্য, তার খেয়াল কতজন রাখেন?”
“ধর্মই বলি বা ভাষা-সংস্কৃতি-খাদ্যাভ্যাস, এখানে একটা রাজ্যের সঙ্গে আর একটার কিন্তু মিলের চেয়ে অমিলই অনেক বেশি। ত্রিপুরার সঙ্গে নাগাল্যান্ডের যেমন কিছুই মেলে না, আবার আসামের সঙ্গে মিজোরামের ফারাকটাই বেশি চোখে পড়ে।”
জাতিগত বা ধর্মীয় নানা ‘ফল্টলাইন’ই আসলে সেভেন সিস্টার্সে এই অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে – এবং সেখানে অযথা ‘ইউফোরিয়া’ বা আনন্দোচ্ছ্বাসের কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই বলেই জয়দীপ বিশ্বাসের অভিমত।
অথচ ভারতের মূল ধারার মিডিয়াতে সেভেন সিস্টার্সকে নিয়ে চিরকাল সেরকমই একটা রঙিন ছবি আঁকার চেষ্টা হয়ে থাকে।
সেভেন সিস্টার্সের মধ্যেই যেমন মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যে খ্রিষ্টানরা সংখ্যাগুরু। অরুণাচল প্রদেশ আবার বৌদ্ধ অধ্যুষিত।
আসামে হিন্দু অসমিয়া ও বাংলাভাষী মুসলিমদের মধ্যে দ্বন্দ্বের ইতিহাসও বহু পুরনো। মণিপুরে হিন্দু মেইতেই ও খ্রিষ্টান কুকিদের মধ্যে যে রক্তাক্ত সংঘর্ষ গত বছর শুরু হয়েছে তা এখনও থামার কোনও লক্ষণ নেই।
ত্রিপুরাতে ব্রিটিশ আমলের পূর্ববঙ্গ থেকেই বাঙালি হিন্দুদের আসার ঢল নেমেছিল, স্থানীয় উপজাতীয়দের সঙ্গে তাদের বিরোধের আগুন আজও জ্বলছে ধিকিধিকি।
সেভেন সিস্টার্স তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের একটা বিস্তীর্ণ অংশে রাষ্ট্রকে যে সেনা মোতায়েন করে সামিরক বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (‘আফস্পা’) দশকের পর দশক ধরে বলবৎ রাখতে হয়েছে – সেটারও কারণ কিন্তু এগুলোই!

বাংলাদেশ আর সেভেন সিস্টার্স
মিজোরামের দু’দুবারের মুখ্যমন্ত্রী, মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের সর্বোচ্চ নেতা জোরামথাঙ্গা বছর দুয়েক আগে এই প্রতিবেদককে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বাংলাদেশের সাহায্য না-পেলে তাদের মিজো জাতীয়তাবাদী আন্দোলন কখনওই সাফল্যের মুখ দেখত না এবং মিজোরাম একটি পৃথক রাজ্য হিসেবেও হয়তো আত্মপ্রকাশ করতে পারত না।
আসলে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এমএনএফ) বিদ্রোহীরা ষাটের দশকের শেষে প্রায় তাদের জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের ভূখণ্ডে (তখনকার পূর্ব পাকিস্তান) আশ্রয় পেয়েছিলেন, যা অব্যাহত ছিল প্রায় দীর্ঘ দু’দশক ধরে।
এমএনএফের প্রবাদপ্রতিম নেতা লালডেঙ্গা পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আতিথেয়তায় ঢাকার লালমাটিয়া এলাকাতে একটি বাড়িতেই থাকতেন, আর ওই গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরগুলো ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের সাজেক ভ্যালি ও তার আশেপাশের এলাকায়।
তখনকার তরুণ জোরামথাঙ্গা ছিলেন সুপ্রিম কমান্ডার লালডেঙার বিশ্বস্ত অনুচর ও ছায়াসঙ্গী। ১৯৮৭তে ভারতে মিজো শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পৃথক মিজোরাম গঠনের পথ প্রশস্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি ও তার বহু সতীর্থ জীবনের বেশিটা সময় বাংলাদেশেই কাটিয়েছেন।
একই কথা খাটে আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আলফা-র পরেশ বড়ুয়া, অনুপ চেতিয়া বা অরবিন্দ রাজখোয়ার মতো সর্বোচ্চ নেতাদের অনেকের ক্ষেত্রেই। তাদের সশস্ত্র আন্দোলনের অনেকটা সময়ই তারা ছিলেন বাংলাদেশের মাটিতে।
ত্রিপুরার সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এনএলএফটি কিংবা ত্রিপুরা ন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্সের (যার নেতা বিজয় কুমার রাংখল এখন একজন মূল ধারার রাজনীতিক) সদস্যরাও অনেকেই বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় পেয়েছেন, সেখান থেকেই পরিচালিত হত তাদের কর্মকাণ্ড।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন (১৯৯১-৯৬ ও ২০০১-০৬) বাংলাদেশ সরকার অবশ্য কখনওই তাদের দেশের মাটিতে এই সব গোষ্ঠীগুলির অস্তিত্ত্ব স্বীকার করেনি – আর এই ইস্যুটিও ঢাকা-দিল্লির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চরম তিক্ততার জন্ম দিয়েছিল।
২০০৯-এ শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় মেয়াদে এই দৃশ্যপটে একটা নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে।
জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করে হাসিনা সরকার একের পর এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে গোপনে বা প্রকাশ্যে ভারতের হাতে তুলে দিতে শুরু করে। বাংলাদেশের মাটিতে ওই সব গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরও একে একে বন্ধ হতে থাকে।
আলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া অবশ্য তার আগেই বাংলাদেশ ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু অনুপ চেতিয়া বা অরবিন্দ রাজখোয়ার মতো গোষ্ঠীর অন্য নেতারা ততদিনে ভারতে ফিরে এসে সরকারের সঙ্গে ‘শান্তি আলোচনা’ও শুরু করে দিয়েছেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা সেভেন সিস্টার্স যে নিরাপত্তাগত দৃষ্টিতে গত এক দশকে অনেকটাই স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ – তার পেছনে শেখ হাসিনা সরকারের অবদান ভারতের কর্মকর্তা ও পর্যবেক্ষকরাও তাই অকুণ্ঠে স্বীকার করেন।
সেভেন সিস্টার্সের জন্য শেখ হাসিনা সরকারের আর একটি বড় উপহার ছিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।
এই দুটি বন্দর ব্যবহারের সুযোগ স্থলবেষ্টিত সেভেন সিস্টার্সকে শুধু সামুদ্রিক বাণিজ্যের নতুন দিগন্তই খুলে দেয়নি, ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ভৌগোলিক দূরত্বও অনেক কমিয়ে দিয়েছে। মাতারবাড়ি বন্দর চালু হলে সেই সুযোগ আরও বাড়বে নিশ্চিতভাবে।
মিয়ানমারের মধ্যে দিয়ে ভারত যে কালাদান মাল্টিমোডাল প্রোজেক্ট বাস্তবায়নের কাজে হাত দিয়েছিল, সেটার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাও অনেক কমে গিয়েছিল বাংলাদেশ সরকারের ওই সিদ্ধান্তের ফলে।
কারণ মিয়ানমারের সিতওয়ে বন্দরের বদলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সড়কপথে পণ্য পরিবহন করা ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য তুলনায় অনেক সহজ।
ফলে এক কথায় বলতে গেলে ‘সেভেন সিস্টার্সে’র সার্বিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির নেপথ্যে বিশেষ করে বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
বছর কয়েক আগে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “ভারতকে আমি যা দিয়েছি, তা তারা সারা জীবন মনে রাখবে!”
বহুল-আলোচিত সেই মন্তব্য নিয়ে পরে বহু চর্চা হলেও শেখ হাসিনা সে দিন ঠিক কী দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তা কখনওই ভেঙে বলেননি বা স্পষ্ট করেননি।
কিন্তু দুই দেশেই পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকরা ধারণা করে থাকেন, তিনি সেদিন সেভেন সিস্টার্সে শান্তি ও প্রগতি ফিরিয়ে আনার দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন – ভারতের যে অঞ্চলটি ঢাকায় ক্ষমতার পালাবদলের পর আবার নতুন করে আলোচনায়!


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ


এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
 
অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেপ্তার
অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেপ্তার
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক ...
ঢাবিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের
ঢাবিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে মোবাইল চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার ...
যেভাবে অশান্ত হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম
যেভাবে অশান্ত হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম
অশান্ত চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চল। খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে দুপক্ষের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত ...
জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস
জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের কথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন বলে আশা ...
জলাবদ্ধতার কারনে বিদ্যালয় মাঠে আমনের বীজতলা
জলাবদ্ধতার কারনে বিদ্যালয় মাঠে আমনের বীজতলা
অব্যাহত ভারী বর্ষণে সৃষ্ট কৃত্তিম জলাবদ্ধতায় এখনো পানির নীচে ফরিদগঞ্জের ফসলের মাঠ। চলছে আমনের মৌসুম। ঘরে থাকা বীজ ধান নষ্ট ...
৩ ট্রিলিয়ন ডলার হালাল অর্থনীতির সুযোগ: মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসে বাংলাদেশ
৩ ট্রিলিয়ন ডলার হালাল অর্থনীতির সুযোগ: মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসে বাংলাদেশ
আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বের বৃহত্তম হালাল শোকেস হিসেবে পরিচিত মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস এর ২০তম আসরে ...
ভারত কীভাবে একযোগে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে?
ভারত কীভাবে একযোগে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে?
একযোগে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে আর এক ধাপ এগোল ভারত সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব অনুমোদিত ...
তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর এর বিবৃতি
তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর এর বিবৃতি
তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর বিবৃতি দিয়েছে। তারা বলেছে- চলমান উত্তেজনা তিন পার্বত্য জেলায় ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নিতে পারে। ...
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ধুম্রজাল
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ধুম্রজাল
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।  তিনি যে কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্র‍য় নিয়েছিলেন, তার ...
১০
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের
বাঙালি ও পাহাড়িদের সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ...
 
জানা গেল কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা
জানা গেল কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা
বাংলাদেশ পুলিশের ১৮৭ জন সদস্য এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। গত ০১ আগস্ট ২০২৪ থেকে মঙ্গলবার (১৭ ...
সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১২৯৯০২ টাকা
সোনার দামে নতুন রেকর্ড, ভরি ১২৯৯০২ টাকা
দেশের বাজারে সোনার দামে বাড়ানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার ...
বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুতের বকেয়া আদায়ে ভারতীয় সংস্থাগুলো কী করবে?
বাংলাদেশ থেকে বিদ্যুতের বকেয়া আদায়ে ভারতীয় সংস্থাগুলো কী করবে?
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যেই গোটা দেশ যখন এই মুহুর্তে লোডশেডিং আর তীব্র বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে, তখন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ...
বিশ্বের ‘স্মার্টেস্ট’ শহরগুলোতে জীবনযাত্রার ধরন ঠিক কেমন?
বিশ্বের ‘স্মার্টেস্ট’ শহরগুলোতে জীবনযাত্রার ধরন ঠিক কেমন?
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং পরিবেশগত পরিবর্তন পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। শহরগুলো একটা সাসটেইনেবল বা টেঁকসই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ...
কাজে ফিরতে চান শ্রমিকরা, উস্কানিতে তৃতীয় পক্ষ
কাজে ফিরতে চান শ্রমিকরা, উস্কানিতে তৃতীয় পক্ষ
বেতন বৃদ্ধি, বকেয়া পরিশোধ, টিফিন, ছুটি বৃদ্ধি, মাতৃকালীন সময়ে ভারী কাজ না করা, কোম্পানির লভ্যাংশের অংশ প্রদানসহ বেশ কিছু দাবি ...
পোশাক কারখানায় অস্থিরতার ৩ কারণ চিহ্নিত
পোশাক কারখানায় অস্থিরতার ৩ কারণ চিহ্নিত
দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে চলমান অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষের জন্য তিন কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো- বহিরাগতদের আক্রমণ-ভাঙচুর, শ্রমিকদের ...
মেট্রোরেল মেরামতে ‘৩৫০ কোটি’ টাকার জায়গায় এখন কত টাকা লাগছে?
মেট্রোরেল মেরামতে ‘৩৫০ কোটি’ টাকার জায়গায় এখন কত টাকা লাগছে?
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন সংস্কার করে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে ...
পেঁয়াজ রপ্তানি নিয়ে ‍সুখবর দিল ভারত
পেঁয়াজ রপ্তানি নিয়ে ‍সুখবর দিল ভারত
পেঁয়াজ উৎপাদন অঞ্চল মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপরে থাকা কঠোর শর্ত শিথিল করেছে ভারত সরকার।এখন থেকে প্রতি ...
সরকারি জমি দখল, টেন্ডারবাজিতে ‘ক্লিন ইমেজের’ আইভী
সরকারি জমি দখল, টেন্ডারবাজিতে ‘ক্লিন ইমেজের’ আইভী
প্রায় ১৩ বছর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। আওয়ামী লীগের আলোচিত নেতা শামীম ...
১০
আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলাম না : মাহফুজ আলম
আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলাম না : মাহফুজ আলম
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাফজুল আলম বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে একটা ক্যাম্পেইন চলছে। বিশেষ করে ভারতীয় মিডিয়া এবং বিএএল ...
সম্পাদক ও প্রকাশক: ইউসুফ আহমেদ (তুহিন)
প্রকাশক কর্তৃক ৭৯/বি, ব্লক বি, এভিনিউ ১, সেকশান ১২, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬ থেকে প্রকাশিত ও ৫২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, ঢাকা ১১০০ থেকে মুদ্রিত
বার্তাকক্ষ : +৮৮০১৯১৫৭৮৪২৬৪, ই-মেইল editor@natun-barta.com, Web : www.Natun-Barta.com.com