/ সারাদেশ / বরিশালে কাঁচা মরিচের কেজি সাড়ে তিনশ’, সবজির বাজারে অস্থিরতা
বরিশালে কাঁচা মরিচের কেজি সাড়ে তিনশ’, সবজির বাজারে অস্থিরতা
নতুন বার্তা, বরিশাল:
|
বরিশালের খুচরা বাজারে আকারভেদে সাড়ে তিনশত থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। আর পাইকারি বাজারে এ মরিচের দর ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। তবে বাজারে যে শুধু কাঁচা মরিচের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে এমনটা নয়, অন্যান্য সবজির দরও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাইকার ও খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা। বরিশাল সিটি মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম দুলাল জানান, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরাঞ্চলে বন্যা ও দেশজুড়ে প্রবল বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাজারে চাহিদার চেয়ে সবজির আমদানি চলতি মাসজুড়েই কম রয়েছে। আর এ কারণে চলতি মাসেই কয়েক দফায় পাইকারি বাজারেই সবজির দর বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম শুভ বলেন, পাইকারি বাজারে গত সপ্তাহে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় এমনকি দু-দিন আগেও তিনশত টাকার নিচে যে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে, সেখানে এখন প্রকারভেদে ৩২০-৩৫০ টাকা দরে কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। তাহলে খুচরো বাজারে শ্রমিক ও পরিবহন খরচা মিটিয়ে এ মরিচের দর প্রকার ভেদে সাড়ে ৩ থেকে ৪ শত টাকায় বিক্রি হওয়াটা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, শুধু যে কাঁচা মরিচের দর বেড়েছে এমনটা নয়, বেশিরভাগ সবজিরই দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল চলতি মাস ধরে। আর বুধবার (০৯ অক্টোবর) বাজারে তো বেগুনের দেখাই মেলেনি। ছোট আর চিকন দেখতে সামান্য কিছু বেগুন পাইকারি বাজারে পাওয়া গেছে তাও ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর এর থেকে একটু ভালো বেগুন ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, বুধবার পাইকারি বাজারে ভালো মানের কাঁচা মরিচ সাড়ে ৩ শত টাকা দরে কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে, আর বরবটি ১ শত টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, রেখা ৫০-৬০ টাকা, গাডি কচু ৪০-৫০টাকা, পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, করলা ৬০-৬৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪৫-৫০ টাকা, টমেটো ১৬০-১৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫৫-৬০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, কাকরোল ৮০-৯০ টাকা, সিম ২৩০-২৪০ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১শত থেকে দেড়শত টাকা দরে কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে। আর লাউ পিস প্রতি আকার ভেদে ৫০-৬০, বোম্বাই মরিচ শত প্রতি ৭ থেকে ৮ শত টাকা, লেবু পোন (৮০ পিস) লেবু ২ থেকে সাড়ে ৩ শত টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তার মতো খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি মাসে সবজির দর ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। নগরের নতুন বাজারের ব্যবসায়ী সাব্বির বলেন, পাইকারি বাজার থেকে একদিন আগে ৩২০ টাকা দরে কাচামরিচ ক্রয় করেছি এবং গাড়িভাড়া দিয়ে খুচরা বাজারে নিয়ে এসে যা এখন ৩৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি। ৮১ টাকা কেজি দরে কেনা বেগুন ৯০-৯৫ টাকায়, ৬০ টাকার লাউ ৭০-৮০ টাকায় আকার ভেদে বিক্রি করছি। তিনি বলেন, পাইকার বাজারে সবজির দর যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে মুনাফা ঠিক রেখে বিক্রি করতে গেলে ক্রেতাদের সাথে বিবাদ ঘটছে। আবার দামের জন্য কোন সবজি বিক্রি না হলে সেটি পচে গেলে আমাদেরই লোকসান হবে, তাই মুনাফা কমিয়ে দিয়েও সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে। নগরের আলেকান্দা এলাকার ভ্রাম্যমাণ তরকারি বিক্রেতা মানিক বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সবজির দর নিয়ে ক্রেতাদের সাথে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। তাদের কোনোভাবেই বুঝাতে পারি না, যে পাইকার বাজারে সবজির দাম বেড়েছে বিধায় আমাকেও বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই গত দু-দিন ধরে সবজি বিক্রিই বন্ধ রাখছি, পাইকার বাজারে দাম কিছুটা কমলে আবার সবজি বিক্রি করবো, আর সে কদিন দিনমজুরের কাজ করবো। আর চৌমাথা এলাকার ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী মনির ও জামাল জানিয়েছেন, কাঁচা মরিচসহ সবজির দর বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ কেনা কমিয়ে দিয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে পাইকারের থেকে খুচরো বাজারে সবজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকার ব্যবধান থাকলেও এখন তা ১৫-৩০ টাকায় নামিয়েও লাভ হচ্ছে না। নগরের নবগ্রাম রোড এলাকার বাসিন্দা মাসুদ সিকদার জানান, বাজারে এখন যে সবজিতেই হাত দেই ৬০ টাকার নিচে কোন কিছুরই মূল্য চাওয়া হয় না, বিশ থেকে ত্রিশ টাকার লাউ শাকের আঁটিও ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তার মতো আরেক ক্রেতা আল আমিন বলেন, গত সপ্তাহে যে লাউ শাক ৪০ টাকায় কিনেছি তা এ সপ্তাহে চাওয়া হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, একইভাবে পুঁই শাক, কুমড়া শাকেরও দাম বেড়ে দেড়গুন হয়েছে। |