/ প্রবাস বাংলা / ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তরের দাবী
ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তরের দাবী
ফয়ছল মনসুর, ইউকে:
|
গত ১৪ অক্টোবর সোমবার ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুলি ফান্কশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনেল এয়ার পোর্টের উদ্যোগে পূর্ব লণ্ডনের লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয় । সংগঠণের আহ্বায়ক কে এম আবুতাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠণের অর্থ সচিব সলিসিটর মোহাম্মদ ইয়াওর উদ্দিন ।সংগঠণের পক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন -সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রব ,যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মো: মফিজুর রহমান ,কাউন্সিলার ফারুক চৌধুরী ,বীর মুক্তিযোদ্ধা আহবাব হোসেন চৌধুরী ,শাহ মুনিম ,জামান আহমদ সিদ্দিকী ,মাহবুবুর রহমান কোরেশী ,খন্দকার সাইদুজ্জামান সুমন প্রমুখ । সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় যে-২০০২ সালে ওসমানী বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করা হয়েছে ।যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটবাসীর দীর্ঘ আন্দোলনের পর লণ্ডন-সিলেট রুটে ডাইরেক্ট ফ্লাইট চালু করা হয় ।অনেকবার ডাইরেক্ট ফ্লাইট বন্ধ হয়েছে। আবার আন্দোলন করার পর চালু হয়েছে। যার ফলে সিলেট প্রবাসীরা সরাসরি বাংলাদেশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশও আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নামে আন্তর্জাতিক হলেও কাজে এখনো আন্তর্জাতিক হয়নি।একমাত্র বিমান ছাড়া অন্য কোন এয়ারলাইন্সকে ওসমানীতে নামতে দেওয়া হচ্ছেনা। অথচ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রতি সপ্তাহে বিমান ছাড়াও ৭টি বিদেশী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট উঠানামা করছে । বাংলাদেশ সরকার ও সিভিল এভিয়েশন অথরিটি সিলেটবাসীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে বৈষম্যমূলক আচরন করছে । বাংলাদেশ বিমানের শতকরা ৯৫ ভাগ যাত্রী সিলেট অণ্চলের। বিমানের বেশীরভাগ যাত্রী সিলেটী হওয়ায় সিলেটীদের জিম্মী করে বিমানের রিটার্ন ভাড়া সিলেট পর্যন্ত কখনো ১৫০০ ,কখনো ১২০০ ,কখনো ১৮০০ পাউণ্ড পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অথচ সমান ফ্লাইটে ঢাকার যাত্রীদের জন্য ৮০০ পাউণ্ড ভাড়া নেওয়া হয়। এটা প্রবাসী সিলেটবাসীর প্রতি আরেক বৈষম্য। যার ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটীরা ছেলে মেয়েসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে দেশে যেতে পারেন না। সম্মেলনে আরো বলা হয় যে,ওসমানী বিমান বন্দরে নতুন টারমিনাল নির্মাণের কাজ তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়েছিল ২০২০সালের অক্টোবর মাসে। বিগত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র শতকরা ২২ভাগ। অথচ ঢাকার শাহজালাল বিমান বন্দরের কাজ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়ে তা শেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এটাও সিলেটবাসীর প্রতি আরেকটি বৈষম্যমূলক আচরন । ওসমানী বিমান বন্দরে প্রবাসী বিমান যাত্রীদের হয়রানী এখনো কমেনি।আন্তর্জাতিক মানের কোন সেবা নেই। বিমানের চেক ইন কাউন্টারে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা হয়রানীর শিকার হোন। বলা হয় যে -এক শ্রেণীর সিলেট বিদ্বেষী কুচক্রিমহল সিণ্ডিকেট তৈরি করে সিলেটবাসীকে হয়রানী করছে। অতীতের সব সরকার সিলেটবাসীর উপরোক্ত সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানরা বাংলাদেশে না গিয়ে তুরস্ক, মরক্কো, মিশর ও ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে হলিডেতে যাচ্ছে। ফলে আমাদের সন্তানরা দেশমুখী হচ্ছেনা এবং বাংলাদেশ বিরাট অংকের আয় থেকে বন্চিত হচ্ছে। বৃটেনের বিভিন্ন সংগঠণ এসব সমস্যার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে আসছেন ।কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা । তাই যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কমিউনিটি সংগঠণের নেতৃবৃন্দের একটি জরুরী বৈঠকে সম্প্রতি ‘ Campaign Committee UK for fully functional Osmani International Airport’ নামে একটি ক্যাম্পেইন গ্রূপ গঠণ করা হয়েছে। এ সংগঠণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নিম্নরূপ দাবী পেশ করা হয় । ১)ওসমানী বিমান বন্দরকে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর করতে হবে। ২) বাংলাদেশের জাতীয় এয়ার লাইন বিমান বাংলাদেশের পাশাপাশি বৃটিশ,তুরস্ক ,কাতার ,আমিরাত ,দুবাই ,ওমান ,সৌদিআরব সহ অন্যান্য দেশের ফ্লাইট চালু করতে হবে । ৩) ওসমানী বিমান বন্দরের নতুন টারমিনালের কাজ দ্রূত সম্পন্ন করতে হবে । ৪) বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া হ্রাস করতে হবে এবং ঢাকা ও সিলেটের মধ্যে বিমানের ভাড়ার পার্থক্য দূর করতে হবে । ৫) ওসমানী ও শাহজালাল বিমান বন্দরে কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন সেকশনে প্রবাসী যাত্রীদের অহেতুক হয়রানী বন্ধ করতে হবে । উপরোক্ত দাবী দাওয়া বাস্তবায়নে যে কর্ম সূচী ঘোষণা করা হয়েছে তা হচ্ছে - ১) লণ্ডন ,ঢাকা ও সিলেটে সাংবাদিক সম্মেলন। ২) বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ। ৩) সিলেট ও লণ্ডনে মানব বন্ধন । ৪) বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ডেলিগেশন প্রেরণ। ৫) বৃটেনের প্রতিটি শহরে সমাবেশ ৬) বিভিন্ন কমিউনিটি সংগঠণের সাথে জনসংযোগ। ৭) সমমনা আন্দোলনরত সংগঠণের নেতৃবৃন্দ নিয়ে বৃহত্তর মোর্চা গঠণ। ইতিমধ্যেই আমরা আগামী ১লা নভেম্বর শুক্রবার সিলেট কোর্ট পয়েন্টে মানব বন্ধনের কর্ম সূচি ঘোষণা করেছি। যতদিন পর্যন্ত আমাদের উপরোক্ত দাবী বাস্তবায়ন না হবে ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে ।এই ন্যায়সঙ্গত এসব দাবী না মানলে বিভিন্ন বয়কট কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। এই আন্দোলনে দলমত সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠণের পক্ষে আরো উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা, শাহ মুনিম, আজম আলী,শাহ সেরওয়ান কামালী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, শেখ ফারুক আহমদ, ও আনোয়ার জাকারিয়া খান সহ প্রমুখ । এদিকে ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুলি ফান্কশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনেল এয়ার পোর্টের পূর্ণ সমথর্ন জানিয়ে গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে'র এক সভা গত ১৫ ই অক্টোবর বেলা ৫ টায় সেন্ট্রাল লন্ডনের উডহ্যাম কমিউনিটি সেন্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কনভেনর কমিউনিটি লিডার ও সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সদস্য সচিব বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মুজিবুর রহমান এর পরিচালনায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন গ্রেটার সিলেট ইউকের প্রেট্রন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডঃ হাসনাত এম হোসেইন এমবিই, গ্রেটার সিলেট ইউকের প্রেট্রন বিশিষ্ট সাংবাদিক কে এম আবুতাহের চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট ইউকের সাবেক চেয়ারপার্সন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী নুরুল ইসলাম মাহবুব,গ্রেটার সিলেট ইউকের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আব্দুল ক্বাইউম কয়ছর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মোস্তফা,সংগঠণের সাউথ ইষ্ট রিজিওনাল কনভেনর বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী হারুনুর রশীদ, সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম, খান জামাল নুরুল ইসলাম, শাহ সাইফুল আক্তার লিখন, জাহাঙ্গীর হোসেইন, গিয়াসউদ্দিন, শেখ নুরুল ইসলাম, সৈয়দ সায়েম করিম, এবি রুনেল, আব্দুল বাছিত বাচ্চু, আমজাদ হোসেন সানি, ও রাসেল খান, প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সভায় ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকের প্রতি পূর্ণ সমথর্ন জানিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপান্তর ও অন্যান্য এয়ারলাইনের ফ্লাইট চালুর জোর দাবি জানিয়েছেন।। |