আজ শুক্রবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২ নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
 / রাজনীতি / দৃশ্যপট পাল্টায় এভাবেই!
দৃশ্যপট পাল্টায় এভাবেই!
নতুন বার্তা, ঢাকা:
Published : Friday, 22 November, 2024 at 2:16 AM
দৃশ্যপট পাল্টায় এভাবেই!কারাগার, বাসা, হাসপাতাল। গেল অনেকগুলো বছর এটাই ছিল খালেদা জিয়ার জীবন। দীর্ঘদিন পর রাষ্ট্রীয় মঞ্চে দেখা গেল তাকে। এক যুগ পর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জে অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও যোগ দেন এই অনুষ্ঠানে। তারা দু’জন কুশল বিনিময় করেন। পাশাপাশি বসে কথা বলেন। ছাত্র আন্দোলনের নেতা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নাহিদ ইসলাম, মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদও খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। রাজনীতিবিদ, সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, নানা পেশার মানুষ আলোকিত করেন সেনাকুঞ্জ।

সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং খালেদা জিয়া যখন আলাপ করছিলেন সে মুহূর্তে গণবিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা ভারতে কী করছিলেন তা জানার উপায় নেই। তবে নিয়তির পরিহাস যে কতোটা নির্মম হতে পারে তা হয়তো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী অনুভব করতে পারেন। শেখ হাসিনা বনাম খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের রাজনীতির ময়দানে এই বৈরিতা দীর্ঘদিনের। তবে ‘যুদ্ধের’ মধ্যেও এক ধরনের শান্তির নীতি তারা অনুসরণ করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হতো কম। সৌহার্দ্যও হয়তো ছিল না। কিন্তু একে- অপরকে দীর্ঘদিন জেলের বাইরে সহ্য করেছেন। যদিও শেখ হাসিনা তার ওপর গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপি সরকারকে দায়ী করেছেন। তবে ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হতে থাকে। এক পর্যায়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। পরে তিনি নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও কার্যত ছিলেন বন্দি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপরও শেখ হাসিনার দীর্ঘ স্বৈরতান্ত্রিক শাসনামলের কোপ পড়ে। তাকে প্রথমে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণ করা হয়। সুদখোরসহ নানা উপাধি দিয়ে তার ওপর আক্রমণ শানান শেখ হাসিনা। একপর্যায়ে  তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হতে থাকে। আদালতের ‘খাঁচায় বন্দি’ নোবেল জয়ীকে দেখে সারা দুনিয়া। ৫ই আগস্ট দৃশ্যপটে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দ্রুতই মুক্তি মেলে খালেদা জিয়ার। ফ্রান্সে অবস্থানরত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভাবছিলেন দেশে ফিরে তাকে কারাগারে যেতে হয় কি-না? কিন্তু মাতৃভূমি থেকে তার ডাক আসে সরকার প্রধান হওয়ার। 
ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং খালেদা জিয়া যখন গতকাল কুশল বিনিময় করছিলেন তখন অনেকে ভাবছিলেন বছর দুয়েক আগে তাদের নিয়ে শেখ হাসিনার করা একটি মন্তব্যের কথা।  ২০২২ সালের ১৮ই মে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কার্যালয়ে  শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ। গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সে আলোচনায় যোগ দেন শেখ হাসিনা।  সেদিনের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, “একটি এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো সেতুর টাকা বন্ধ করেছে, তাকে পদ্মা নদীতে দুইটা চুবানি দিয়ে তোলা উচিত। মরে যাতে না যায়, পদ্মা নদীতে একটু চুবানি দিয়ে  সেতুতে তুলে দেয়া উচিত। তাহলে যদি শিক্ষা হয়। পদ্মা সেতুর অর্থ বন্ধ করালো ড. ইউনূস। কেন? গ্রামীণ ব্যাংকের একটি এমডি পদে তাকে থাকতে হবে।” ওইদিনের বক্তব্যে শেখ হাসিনা আরও বলেন, “খালেদা জিয়া বলেছিল যে, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা  সেতু বানাচ্ছে, কারণ বিভিন্ন স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে, ওটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেয়া। তো বলছিল,  জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। আবার তার সঙ্গে তার কিছু  দোসররাও। তাদেরকে কি করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে যেয়ে, ওখান থেকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেয়া উচিত।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু রাজনীতির মঞ্চ কখনো কখনো রোমাঞ্চকর এবং নিষ্ঠুর। সেই মঞ্চ কাল পাশাপাশি কুশল বিনিময়ের সুযোগ করে দিলো বাংলাদেশের ইতিহাসের দুই আলোচিত ব্যক্তিকে। যখন দিল্লির কোথাও বসে শেখ হাসিনা হয়তো হিসাব মেলাচ্ছেন! কোথা থেকে কি হয়ে গেল! যদিও রাজনীতির পণ্ডিতরা তাকে বার বারই হুঁশিয়ার করছিলেন বহুদিন ধরেই। বলেছিলেন, সব দরজা-জানালা বন্ধ করতে নেই। সমঝোতার কিছু পথ খোলা রাখতে হয়। না হয় শেষ পর্যন্ত কোনো হিসাবই মেলে না। আওয়ামী লীগ নেতারাই এখন বলছেন, বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন আয়োজন ভুল ছিল! কিন্তু শেখ হাসিনা যখন মসনদে ছিলেন তখন কেউ হয়তো তাকে সেটা বলার সাহস পাননি। অনুগত মিডিয়াও কেবল তোষামোদ করে গেছে। মনে করিয়ে দেয়নি রাজনীতিতে এক সময় থামতে হয়।

শেখ হাসিনা এখন কোথায়? ক’দিন আগেই ভারতীয় মিডিয়া খবর দিয়েছিল, নয়াদিল্লির লোধি গার্ডেন এলাকায় বাংলোতে আছেন শেখ হাসিনা। সর্বশেষ বিবিসিতে সাংবাদিক শুভজ্যোতি ঘোষ লিখেছেন, ‘আসলে আজ থেকে ঠিক একশ’ দিন আগে আগস্টের ৫ তারিখে চরম নাটকীয় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা যখন ভারতে পা রাখেন, দিল্লির বিশ্বাস ছিল তার এই আসাটা একেবারেই সাময়িক- ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে যাওয়ার আগে এটা একটা সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতির  বেশি কিছু নয়! যেকোনো মুহূর্তে তৃতীয়  কোনো দেশের উদ্দেশ্যে তিনি রওনা হয়ে যাবেন, এই ধারণা থেকেই প্রথম দু-চারদিন তাকে (সঙ্গে বোন শেখ  রেহানাকে) রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিংয়েই,  যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার  দেশের বিমান বাহিনীর। কিন্তু চট করে শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনো  দেশে পাড়ি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাকে হিন্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির  কোনো গোপন ঠিকানায়। পরে তাকে হয়তো দিল্লির কাছাকাছি অন্য কোনো সুরক্ষিত ডেরাতে সরিয়েও নেয়া হয়েছে- কিন্তু এ ব্যাপারে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।’

এমন রাষ্ট্র গড়তে চাই যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবে: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের যে স্বপ্ন নিয়ে রাষ্ট্রকে স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা এখন থেকে বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেখানে সত্যিকার অর্থে জনগণই হবে সকল ক্ষমতার মালিক। গতকাল সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রফেসর ড. ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারও উপরে না, আবার কেউ কারও নিচেও না; এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। বিশ্ব দরবারে মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখবো। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তি হবে পারস্পরিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা। জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং বৈশ্বিক শান্তি ও অর্থনীতি সুসংহতকরণে আমাদের একত্রে কাজ করতে হবে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ফলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও পরিচিতি লাভ করেছে। দেশ স্বাধীন করার মহান ব্রত নিয়ে ’৭১- এর ২৫শে মার্চ কালরাত থেকে বাঙালি সেনারা সেনানিবাস ত্যাগ করে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একই সঙ্গে এই দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা সাধারণ মানুষ সকলেই যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে যা একটি জনযুদ্ধে রূপ নেয়। আমাদের মা-বোনেরা মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণসহ বিভিন্নভাবে যুদ্ধে সহযোগিতা করেছেন। সরকারপ্রধান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া সকল বাহিনীকে ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ নামে সাংগঠনিক রূপ দেয়া হয়। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে যুদ্ধ পরিচালিত হয়। মাত্র ২টি গান বোট ‘পদ্মা’ ও ‘পলাশ্থ’ নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জলপথে যুদ্ধ শুরু করে। এ ছাড়াও পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশি সাবমেরিনার এবং নাবিকদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা অকুতোভয় নৌ-কমান্ডো দল ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামক দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন নদী বন্দরে খাদ্য ও রসদ বোঝাই শত্রু জাহাজ ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিমান বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘কিলো ফ্লাইট’ চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের জ্বালানি ডিপোসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সফল অভিযান পরিচালনা করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদানকে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের সঙ্গে একীভূত করার উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ২১শে নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্য এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে। সেই আক্রমণের ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে আমরা স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করি।

স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদতবরণকারী বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদতবরণকারী সকল বীর শহীদদের এবং মহান আল্লাহর দরবারে আমি তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমি সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য এবং সম্মানিত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের এই আয়োজনে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে যে সকল খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীগণ উপস্থিত আছেন তাদের জন্যও রইলো আমার বিনীত শ্রদ্ধা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চলমান রয়েছে। সময়ের আবর্তে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্‌যাপনকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী যে উদ্যোগ প্রতিবছর নিচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ড. ইউনূস বলেন, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সমপ্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদেরকে দিয়েছে তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা করার জন্য আমরা দৃঢ়প্রত্যয়ী এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল বীর শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল প্রধান উপদেষ্টাকে সালাম জানান। এ সময়  বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। প্রধান উপদেষ্টা সেখানে রাখা দর্শনার্থীদের বইয়েও স্বাক্ষর করেন। এর আগে শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেখানে তিন বাহিনীর প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ড. ইউনূসকে স্বাগত জানান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয় এবং তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক হামলা চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে এই ঐতিহাসিক দিনটিকে প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়া, ড. ইউনূসের সঙ্গে কুশল বিনিময়: সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। প্রধান উপদেষ্টার দেয়া বৈকালিক এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার পাশেই বসেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা তার আসনে বসে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এসময় হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে কথা বলতে দেখা যায়। দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন তিনি। 


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ


 
বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক ডিসেম্বরে, হতে পারে হাসিনার প্রত্যর্পণের আলোচনা
বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক ডিসেম্বরে, হতে পারে হাসিনার প্রত্যর্পণের আলোচনা
ডিসেম্বরের শুরুতে ঢাকায় নির্ধারিত আসন্ন বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্র দপ্তর আলোচনা (এফওসি)’র সময় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে আলোচনা করতে পারে।বৃহস্পতিবার ...
আবারও এমপি-মন্ত্রী হবো, হুংকারের পরেই জুতা নিক্ষেপ
আবারও এমপি-মন্ত্রী হবো, হুংকারের পরেই জুতা নিক্ষেপ
আবারও এদেশের এমপি ও মন্ত্রী হওয়ার হৃংকার দিলেন ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমর। বৃহস্পতিবার (২১ ...
অটোচালকদের অবরোধ নগর জুড়ে দুর্ভোগ
অটোচালকদের অবরোধ নগর জুড়ে দুর্ভোগ
রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। গতকাল সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৬ ...
দৃশ্যপট পাল্টায় এভাবেই!
দৃশ্যপট পাল্টায় এভাবেই!
কারাগার, বাসা, হাসপাতাল। গেল অনেকগুলো বছর এটাই ছিল খালেদা জিয়ার জীবন। দীর্ঘদিন পর রাষ্ট্রীয় মঞ্চে দেখা গেল তাকে। এক যুগ ...
‘বিচারকাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই’
‘বিচারকাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ব্রিটিশ আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, আসন্ন বিচারপ্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ...
রাস্তায় ব্যারিকেড, বন্ধ হবে ইন্টারনেট: পিটিআইয়ের সমাবেশ ঠেকাতে পাকিস্তানে তোড়জোড়
রাস্তায় ব্যারিকেড, বন্ধ হবে ইন্টারনেট: পিটিআইয়ের সমাবেশ ঠেকাতে পাকিস্তানে তোড়জোড়
২৪ নভেম্বর বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। বিক্ষোভ ঠেকাতে এরই মধ্যে তোড়জোড় শুরু ...
ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়ী পার্টনার চাই: টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস
ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়ী পার্টনার চাই: টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। আমরাও একটি ব্যবসায়ী ...
বেতন পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করলেন বেক্সিমকোর শ্রমিকরা
বেতন পেয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করলেন বেক্সিমকোর শ্রমিকরা
টানা ৬ দিন আন্দোলন করার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেতন পেলেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা। বেতন পেয়ে রাত পৌনে আটটার দিকে ...
বোয়ালখালীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদ নির্মাণ কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে
বোয়ালখালীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মসজিদ নির্মাণ কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হকের বিরুদ্ধে শ্রীপুর বাইতুন নুর জামে মসজিদ নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ার ...
১০
ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা
ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে সংবর্ধনা
সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন-২৪ বিজয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের ...
 
আলুর কেজি ৪০০ টাকা
আলুর কেজি ৪০০ টাকা
বাজারে উঠেছে আগাম আলু। বগুড়ার নবান্ন উৎসবকে ঘিরে বাজারে উঠেছে নতুন আলু। দাম নাগালের বাইরে হলেও উৎসবের আমেজে কম বেশি ...
কয়রায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর কে নিয়ে কটূক্তি করছেন এক শিক্ষক
কয়রায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর কে নিয়ে কটূক্তি করছেন এক শিক্ষক
খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের দীঘির পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমীর ...
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারো মারা গেছে মাদ্রাসা ছাত্র
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আবারো মারা গেছে মাদ্রাসা ছাত্র
এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলব্রীজ এলাকায় পূনর্ভবা নদীতে ডুবে মারা গেছে মুনতাসীর (১৩) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৪ ...
কয়রায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লাস রুম না থাকায় পাঠদানে ব্যহত
কয়রায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লাস রুম না থাকায় পাঠদানে ব্যহত
খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের বোগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্লাস রুম না থাকায় পাঠদানে সমষা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ...
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসী রনি গ্রেপ্তার
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসী রনি গ্রেপ্তার
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারী সন্ত্রাসী মো. বাপ্পি চৌধুরী রনিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত ১টা ...
আলু চাষির কপালে চিন্তার ভাঁজ: আত্রাইয়ে বীজ আলুর কৃত্তিম সংকট, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা
আলু চাষির কপালে চিন্তার ভাঁজ: আত্রাইয়ে বীজ আলুর কৃত্তিম সংকট, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা
উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে আগাম জাতের বীজ আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। মৌসুম ...
‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়েছে ফেসবুক, নেপথ্যে কী?
‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়েছে ফেসবুক, নেপথ্যে কী?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া #WeAreNahid হ্যাশট্যাগে সমর্থন পাচ্ছেন। ...
মিস ইউনিভার্সের মঞ্চ থেকে বিতাড়িত সুন্দরী
মিস ইউনিভার্সের মঞ্চ থেকে বিতাড়িত সুন্দরী
ইতালি মোরা, পানামার প্রতিনিধিত্বকারী মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগী। তাকে সম্প্রতি প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালের কয়েকদিন আগে অযোগ্য বলে ঘোষণা করে  বরখাস্ত করা ...
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মৃত্যু
আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মৃত্যু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত আরেক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. আব্দুল্লাহ। তিনি রাজধানীর সরকারি সোহরাওয়ার্দী ...
১০
লক্ষ্মীপুর জেলা ড্রাম ট্রাক মালিক সমিতি কমিটি গঠন
লক্ষ্মীপুর জেলা ড্রাম ট্রাক মালিক সমিতি কমিটি গঠন
লক্ষ্মীপুর জেলা ড্রাম ট্রাক মালিক সমিতিতে মহিউদ্দিন জনি কে সভাপতি ও জুবায়ের হোসেন কে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য কমিটি ...
সম্পাদক ও প্রকাশক: ইউসুফ আহমেদ (তুহিন)
প্রকাশক কর্তৃক ৭৯/বি, ব্লক বি, এভিনিউ ১, সেকশান ১২, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬ থেকে প্রকাশিত ও ৫২ টয়েনবি সার্কুলার রোড, ঢাকা ১১০০ থেকে মুদ্রিত
বার্তাকক্ষ : +৮৮০১৯১৫৭৮৪২৬৪, ই-মেইল editor@natun-barta.com, Web : www.Natun-Barta.com.com