/ অপরাধ / ঢালাও মামলায় বিহারি নেতা গ্রেপ্তার, পিবিআই কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা
নিজের চাকরি অস্বীকার করলেন পিবিআই কর্মকর্তা
ঢালাও মামলায় বিহারি নেতা গ্রেপ্তার, পিবিআই কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় বিহারি নেতা আব্দুল কুদ্দুস শাওনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) । মঙ্গলবার ( ১৪ জানুয়ারি ) রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর থেকে এই বিহারি নেতাকে গ্রেপ্তার করে রহস্যজনক কারণে তাৎক্ষণিক আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিহারি নেতারা। তাদের অভিযোগ প্লট মালিকদের কাছ থেকে প্রভাবিত হয়ে এমনটি করেছেন কল্যাণপুর পিবিআই কার্যালয়ে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন। কারণ বিহারি নেতাদের কারাগারে থাকলে বিহারি ক্যাম্প উচ্ছেদের পথ ভূমিদূস্যদের জন্য সহজ হবে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পিবিআই কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পিবিআইতে চাকরি করি না। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনের বিচার দাবি ও গ্রেপ্তার বিহারি নেতা শাওনকে মুক্ত করতে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে উর্দুভাষী বাংলাদেশীদের সংগঠন (ইএসপিওয়াইআরম)। দুই দিনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও পিবিআই হেড কোয়ার্টার ঘেরাও কর্মসূচিসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে উর্দু স্পীকিং পিপলস ইউথ রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্ট’র (ইএসপিওয়াইআরম) সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার ও আমার সংগঠনের নেতৃবৃন্দের নামে একাধিক গায়েবী মামলা দেয়া হয়। সরকার পতনের পর সেই মামলাগুলোর মধ্যে একটি শেষ হয়েছে। অন্যান্য মামলাগুলো এখনো চলমান। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আবার ছাত্র-জনতার হত্যা সংক্রান্ত ঢালাও মামলায় আমার ও আমার সংগঠনের নেতাদের নাম জড়িয়ে দেয়া হয়। টার্গেট করে চাঁদাবাজির উদ্যেশ্যে বেনারসী পল্লবীর বড় বড় ব্যবসায়ীকেও আসামী করা হয়েছে। ঢালাও মামলায় আমাদের নেতাকর্মীদের নাম জড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংলিষ্টদের দপ্তরে চিঠিও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা গত ৯ অক্টোবর সাধারণ ক্যাম্পবাসীদের নিয়ে সড়ক অবরোধ করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢালাও মামলায় কোনো বিহারি নেতা ও ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হবে না। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আইজিপি ও পুলিশ কমিশনারও ঢালাও মামলায় যাকে তাকে গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হকও আমাদের আশ্বাস দেন। কিন্তু আজ দুপুরে বিহারি সংগঠন বিএমডাব্লিউডিসির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস শাওনকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। রহস্যজনক কারণে আধাঘন্টার মধ্যে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। কাউকে কথা বলার সুযোগ পর্যন্ত দেননি পিবিআই কর্মকর্তারা। এসব করে বিহারিদের আন্দোলনে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই বিহারি নেতা। উর্দুভাষী যুব-ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মাকসুদ আলম দ্য নিউজকে বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনের বিচার দাবি ও গ্রেপ্তার বিহারি নেতা শাওনকে মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। এরমধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও পিবিআই হেড কোয়ার্টার ঘেরাও কর্মসূচিসহ কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এদিকে বিহারি নেতা শাওনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে কল্যাণপুর পিবিআই কার্যালয়ে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন প্রথমে বলেন, আমি কোনো বক্তব্য দিতে চাই না। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর আবারো তার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি প্রশ্ন করেন, আমাকে ফোন দিয়েছেন কেন? এসময় তিনি বলেন, ‘আমি পিবিআইতে চাকরি করিনা।’ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পিবিআই এসআইএন্ডও (অর্গানাইজড ক্রাইম- উত্তর) কল্যানপুর, ঢাকা এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াইঅংপ্রু মারমা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি নতুন জয়েন করেছি। কল্যাণপুর অফিসে আমার যাওয়া হয়নি। তবে আসামির ফরওয়ার্ডিংয়ে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেনের নাম ও মোবাইল নাম্বার দেয়া আছে। একই সাথে আসামি রুজুর ক্ষেত্রে পিবিআই এসআইএন্ডও (অর্গানাইজড ক্রাইম- উত্তর) কল্যানপুর, ঢাকা এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াইঅংপ্রু মারমার সিল ও সাক্ষরও দেয়া আছে। |