![]() ঈদ-গরম সামনে রেখে বিক্রি বেড়েছে এসির
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার এসির ব্র্যান্ডশপগুলো ঘুরে জানা যায়, এসির বেচাকেনা বেড়েছে। কেউ ঈদ উপলক্ষে কেউ গরম মাথায় রেখে কিনছেন। সব ধরনের এসির দাম কয়েক দিন আগে বসানো শুল্কের কারণে এমনিতেই বেড়েছে। তবে ঈদ সামনে রেখে ব্র্যান্ডগুলো ছাড় দেওয়ায় অনেকে আগেভাগেই কিনছেন। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, গত ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখেছে ২০২৪ সাল। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এবারও গরম বেশি হবে। এ শঙ্কায় বেড়েছে এসির চাহিদা। অনেকে ঈদে অন্য বাজেট কমিয়ে এসি কিনছেন। কোম্পানিগুলোও ক্রেতা টানতে বিভিন্ন অফার দিয়ে রেখেছে। দেশের মানুষের একটি বড় অংশের ক্রয়ক্ষমতাও আগের চেয়ে বেড়েছে, যা এসির বাজার বড় হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। আয় বাড়ার পাশাপাশি গত কয়েক বছরে গরমের তীব্রতা এসির চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। এছাড়া গরমের কারণে এসি এখন বিলাসী পণ্য নয়, প্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি শুল্ক কিছুটা বাড়ায় গতবারের চেয়ে এবার এসির দাম কিছুটা বেশি। এসির ক্ষমতাভেদে দুই থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম। যদিও এখনো বিভিন্ন ছাড়ে সে বাড়তি দাম সমন্বয়ের চেষ্টা করছে কোম্পানিগুলো। ফলে এখনো অধিকাংশ কোম্পানির এসি আগের দামেই কেনা যাচ্ছে। রাজধানীর গুলিস্তান, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সচরাচর প্রতি বছর মার্চ থেকে এসি বিক্রি শুরু হয়। এবার মার্চের শুরু থেকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এসি বিক্রি। বিক্রি ভালো হওয়ায় বিক্রেতাদের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে। বাড্ডা ট্রান্সকম ইলেক্ট্রনিক্সের এক্সিকিউটিভ ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, ‘বিক্রির মৌসুম শুরু হতেই ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। তাতে ক্রেতাদের ভালো সাড়া মিলছে। এখন ঈদেও প্রচুর ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য কেনেন মানুষ। এসির বিক্রি বেশ ভালো।’ বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর এসির চাহিদা এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেড়েছে। তবে এবার পুরো মৌসুমে বিক্রি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছেন তারা। যদিও এসি বিক্রির নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। এই শিল্পখাত সংশ্লিষ্টদের মতে, বাসাবাড়ির জন্য বছরে চার লাখ এসির চাহিদা রয়েছে। গরম বেশি হলে তা বেড়ে পাঁচ লাখে দাঁড়াবে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রতি বছর গড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার এসি বিক্রি হয়। ইলেক্ট্রো মার্ট লিমিটেডের (ইএমএল) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আফসার বলেন, ‘বছরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় মার্চ, এপ্রিল, মে এবং জুন মাসে এসি বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। বছরের ৯০ শতাংশ বিক্রি হয় এই সময়ের মধ্যে। এবছর মার্চের শুরু থেকে বিক্রি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।’ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ভিশন ইলেক্ট্রনিক্সের এসি বিক্রিও বেড়েছে। ভিশন ইলেক্ট্রনিক্সের বার্ষিক এসি উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় ৫০ হাজার ইউনিট। ভিশনের হেড অব মার্কেটিং মোহিত চক্রবর্তী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার বছরের শুরু থেকে একটি ভালো বিক্রি আমরা খেয়াল করছি। কারণ, গত বছরের চেয়ে এবার মানুষের হাতে বেশি অর্থ আছে। দ্রব্যমূল্য এখন কমেছে, যে কারণে ঈদের বিভিন্ন কেনাকাটার সঙ্গে মানুষ এসি কিনছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও ক্রেতা টানতে খুব ভালো ভালো অফার দিয়েছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শোরুমেও এসি রেখেছি। ভালো পণ্য কম দামে দিচ্ছি, কিস্তি সুবিধাও রয়েছে। সবমিলে এবার খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর এবছর শুধু নয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসির চাহিদা বাড়ার কারণে এর বাজারও দ্রুত বাড়ছে।’ বাড্ডার একটি শোরুমে পরিবারসহ এসি কিনতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী টিপু সুলতান। তিনি বলেন, ‘গত বছর গরমে অনেক কষ্ট করেছি। এবার ঈদের অন্য বাজেট কিছুটা কমিয়ে দেড় টনের একটি এসি কিনচে চাই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি দেখলাম। যেটাতে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে সেটা কিনবো বলে ঠিক করেছি।’ চাহিদা ও দাম কেমন? বিক্রেতারা জানান, প্রতিবারের মতো এবার বাসাবাড়িতে এক টন থেকে দেড় টন ক্ষমতার এসির চাহিদা বেশি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ চাহিদা দেড় টন এসির। দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডভেদে দেড় টন ইনভার্টার অথবা নন-ইনভার্টার এসি ৫৮ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে দেশি ব্র্যান্ড ভিশন, ওয়ালটনের মতো এসিগুলোর দামও তুলনামূলক কম। চাহিদাও বেশি দেখা গেছে। এদিকে এক টনের ইনভার্টার অথবা নন-ইনভার্টার এসি পাওয়া যাচ্ছে ৪২ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকার মধ্যে। তবে তুলনামূলক কম দামের এসি বেশি বেচাকেনা হয়। এছাড়া এসি কেনায় কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের সুযোগ আছে। এছাড়া চায়নিজ কিছু ব্র্যান্ডের এসিরও ভালো বিক্রি আছে। এসব এসির দাম আরও কম। বাজারে গ্রি, সিঙ্গার, জেনারেল, ওয়ার্লপুল, হায়ার ব্র্যান্ডের এসিরও ভালো চাহিদা আছে। |