![]() ঈদের পর বাজার তদারকিতে ঢিমেতাল: ফের পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, অস্বস্তিতে ভোক্তা
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ভরা আমন মৌসুমেই বাড়ানো হয় চালের দাম। এখনো তা কমার কোনো লক্ষণ নেই। খুচরা বাজারে এক কেজি সরু চাল কিনতে ৮৫ টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে। আর গরিবের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ন্যূনতম ৫৫ টাকায়। বিক্রেতারা মসলা পণ্যেও বাড়তি দাম হাঁকাচ্ছেন। এছাড়া মাংসের দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে। এতে ভোক্তারা বাজারে এসে এক প্রকার মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। এ বিষয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে। চাহিদা মেটাতে সংকটে পড়ে। রোজা ও ঈদ ঘিরে বাজারে সংস্থাগুলো তদারকি জোরদার করায় ভোক্তারা স্বস্তিতে ছিল। তবে ঈদের পর তদারকিতে ঢিলেঢালা ভাব থাকায় বিক্রেতারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও নীরবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত হবে, অসাধুদের আইনের আওতায় আনা। সঙ্গে রোজার মতো বাজারে তদারকি জোরদার রাখা। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও ৫০ টাকা ছিল। আর মাসখানেক আগে সর্বনিম্ন কেজিপ্রতি ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও বুধবার সর্বনিম্ন বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা। সেক্ষেত্রে মাসের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা। যা সাত দিন আগে ছিল ১২৫-১২৮ টাকা। কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। এদিয়ে সরকারের নীতি সহায়তার মেয়াদ শেষ হওয়ায়, লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮৯ টাকা। যা এতদিন ছিল ১৭৫ টাকা। বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা। আগে যা ৮৫২ টাকা ছিল। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ থেকে বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা করা হয়েছে। খোলা পাম তেলও ১৫৭ থেকে বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা লিটার করা হয়েছে। অর্থাৎ খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১২ টাকা। নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. সালাউদ্দিন বলেন, ঈদের পর সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সরবরাহ থাকলেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। রোজা ও ঈদ ঘিরে ব্যবসায়ীরা জবাবদিহির আওতায় ছিল। তদারকি সংস্থা কঠোরভাবে তদারকি করেছে। এখন তদারকি সংস্থার কর্মকর্তাদের বাজারে দেখা যাচ্ছে না। এতে বিক্রেতারা সুযোগ পেয়ে ফের দাম বাড়িয়ে ভোক্তাকে ফের জিম্মি করে ফেলছে। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি রসুন ১৬০ ও আমদানি করা রসুন সর্বোচ্চ ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি ও আমদানি করা হলুদ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৪০০-৪২০ টাকা। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১০০-২০০ টাকা। খুচরা বাজারে জিরার কেজি ৬৫০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি লবঙ্গ ১৬০০ টাকা, ছোট দানার এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৫১০০ টাকা। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পর বাজারে কাঁচামরিচ, টমেটো, পেঁপে, শসা, লেবুর দাম বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৬০-৬৫ টাকা, যা সাত দিন আগেও ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিকেজি পেঁপে কিনতে ক্রেতার গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা, যা আগে ৫০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতিকেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, যা আগে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। ঈদের আগেও খুচরা পর্যায়ে কাঁচামরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা। অন্যদিকে সরবরাহ সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বিক্রেতারা মাছের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। বিক্রেতারা জানায়, প্রতিকেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। যা ঈদের আগে ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা। যা আগে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সরপুঁটি প্রতিকেজির দাম ২২০-২৩০ টাকা, যা আগে ২১০-২২০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতিকেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, বড় আকারের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকা। সাত দিনের ব্যবধানে এটি ৫-১০ টাকা বেশি। সঙ্গে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের চিংড়ি ৬৫০-৭৫০ টাকা, নদীর চিংড়ি ৮০০-১০০০ টাকা, শিং মাছের কেজি ৮৫০-৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। |