![]() কথায় কথায় সড়ক অবরোধ, নিজেদের পদক্ষেপ জানালো সেনাবাহিনী
নতুন বার্তা, ঢাকা:
|
![]() এ প্রশ্নে সেনাসদর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, অবরোধে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায় এবং আর্থিকভাবে সব খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেনাবাহিনী চেষ্টা করে যত কম সময়ের মধ্যে অবরোধ মুক্ত করা যায়। রাজধানীতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অবরোধ মুক্ত করতে পেট্রোলিং ও কর্ম তৎপরতার মাধ্যমে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন এ সেনা কর্মকর্তা। এসময় তিনি এসব কথা বলেন। মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মিরা বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে জেলে ও মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, নাফ নদীতে জেলেদের যে অসুবিধা হচ্ছে- এ বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবি দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাদের কাজ চলমান আছে। অনেক জেলে বাংলাদেশে চলে আসছেন, বাকিদের বিষয়েও প্রক্রিয়া চলমান। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অথবা নৌবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। সড়ক অবরোধের কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী কীভাবে কাজ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ থাকলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবচাক প্রভাবসহ সব খাতে নেতিবচাক প্রভাব পড়ে। শুধু ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে গতকাল মঙ্গলবার দুই ঘণ্টা অবরোধ ছিল। এ অবরোধে দুর্ভোগ বেড়ে যায় এবং আর্থিকভাবে সব খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেনাবাহিনী চেষ্টা করে যত কম সময়ের মধ্যে অবরোধ মুক্ত করা যায়। গতকাল মঙ্গলবারও ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর চেষ্টায় অবরোধ মুক্ত করা হয়েছে। রাজধানীতে অবরোধের বিষয়ে এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনীর পেট্রোলিং ও কর্ম তৎপরতার মাধ্যমে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি অবরোধ মুক্ত করার জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্চ ফর গাজা কর্মসূচিতে ও আগে কয়েক জায়গায় দেখা গেছে নিষিদ্ধ সংগঠনের পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল করতে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে- জানতে চাইলে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্চ ফর গাজার বিক্ষোভে সেনাবাহিনী কালো পতাকাধারীদের রহিত করেছে। কালো পতাকাধারী হলেই যে সে জঙ্গি সংগঠনের এটির কোনো প্রমাণ আমরা এখনো পায়নি। তবে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী সোচ্চার রয়েছে। গোয়েন্দা বাহিনীও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। গত ৮ মাস ধরে সশস্ত্র বাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় কাজ করছে। কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক দলের কোনো চাপ পাচ্ছে কি না? রাজনৈতিক দলগুলো সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছে কি না অথবা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে কোনো থ্রেটের সম্মুখীন হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধা পাচ্ছি না। আমরা যে কোনো অপরাধীকে গ্রেফতারের পর অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করি। সেখানে পরবর্তী আইনি বিচারকাজ সেনাবাহিনীর দায়িত্বের বাইরে। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে, যেখানে যতটুকু ব্যবহার করার দরকার ততটুকুই ব্যবহার করা হচ্ছে। খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনার তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থান কিছুটা শনাক্ত করা গেছে। এ বিষয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা অবস্থা ভালো, নিরাপত্তা জরালো করা হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে রাজনৈতিকভাবে কোনো চাপ অনুভব করছে কি না সেনাবাহিনী? এ বিষয়ে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশে এই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত। সরকারের নির্দেশিত যে কোনো দায়িত্ব পালন করে আসছি এবং পালন করে যাবো। সেনাবাহিনী সততা, ন্যায়-নীতির সঙ্গে, প্রত্যয় ও সহনশীলতার সঙ্গে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করছে, ভবিষ্যতেও করবে। বিভিন্ন সময় সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, কোনো রকম গুজবে সেনাবাহিনী বিচলিত নয়। বরং সেনাবাহিনী আরও একতাবদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির পাশে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি সেনাপ্রধান রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সম্প্রতি সেনাপ্রধানের রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর একটি নিয়মিত কার্যক্রম। এই সফরে সেনাপ্রধান বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করেন। এর ফলে সামরিক সহযোগিতা আরও প্রসার হবে। সংবাদ সম্মেলনে সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। |